বিরামপুর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা : আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হওয়ায় বিরামপুরে গ্রীষ্মকালীন সবজি সজিনা ডাটার বাম্পার ফলন হয়েছে । উপজেলার গ্রাম-গঞ্জে সব খানে গাছে গাছে গত বছরের চেয়ে এবার ছোট বড় সব গাছেই প্রচুর পরিমাণ সজিনার ডাটা ধরেছে। বাজারে আমদানিও হচ্ছে প্রচুর। পুষ্টিগুনে ভরপুর সজিনা ডাটা প্রচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে। স্থানীয় ভাবে বিক্রির পাশাপাশি ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির চেয়ে সজিনার ডাটার পুষ্টিগুণ স্বাদ বেশি হওয়ায় যে কোন বয়সের মানুষ সজিনা খেতে ভালোবাসে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রতি আউন্স সজিনায় ৪ গ্লাস দুধের সমপরিমাণ ক্যালসিয়াম , ৭টি কমলালেবুর সমপরিমাণ ভিটামিন সি এবং ৩টি কলার সমপরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে। এছাড়াও খনিজ লবণ, আয়রন সহ প্রোটিন ও শর্করা জাতীয় খাদ্য রয়েছে। ভিটামিন এ বি সি সমৃদ্ধ সজিনা ডাটা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত কার্যকারী। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি, বসন্ত রোগের প্রতিষেধক, শরীরের পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে বলে সজিনা ডাটা ওষুধি সবজি হিসেবে ও সমাদৃত।

সজিনা গাছ অবহেলা অযত্নে প্রাকৃতিক ভাবেই বেড়ে ওঠে। এ গাছ লাগাতে কোন বীজ বা চারার প্রয়োজন হয় না। গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে রাখলে সজিনা গাছ জন্মায় । গ্রাম-গঞ্জে পতিত জমিতে পুকুর পাড়, রাস্তার ধারে, বাড়ির আঙ্গিনা এবং শহরের যে কোন ফাঁকা শুষ্ক জায়গায় সজিনার গাছ লাগানো যায় । সজিনার ডাটা প্রধানত দুই প্রজাতির। এর মধ্যে এক প্রজাতির গাছ থেকে বছরে তিন থেকে চার বার ডাটা পাওয়া যায় স্থানীয়ভাবে এর নাম রাইখঞ্জন। অপর জাত স্থানীয় ভাবে ঝুল বলা হয়। বর্তমানে হাট-বাজারে ঝুল প্রজাতির সজিনার ডাটা পাওয়া যাচ্ছে। রাইখনজন ২/৩ সপ্তাহ পরে বাজারে উঠবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। বাজারে সজিনা ডাটা পাইকারি প্রতি কেজি ৪০ টাকা হতে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বিরামপুর পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জেবুন্নেছা জানান, তার দুটি গাছের সজিনার ডাটা নিজেদের পারিবারিক চাহিদা ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দিয়েও সজিনা বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।

বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, সব ধরনের কৃষক বিশেষ করে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষীদের প্রত্যেকের বাড়িতে সজিনার গাছ রোপনের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এই উপজেলায় প্রাকৃতিক ভাবেই পরিচর্যা ছাড়াই সজিনা বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।