এম এ রব, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) পয়েন্ট সংলগ্ন ভুরভুরিয়া ছড়ার দুই পাড় এখন সাদা কাশফুলে ভরে উঠেছে। প্রকৃতির এই অপরূপ দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে দর্শনার্থীরা। বিকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারী-পুরুষ, শিশু, তরুণ-তরুণী আর কিশোররা ভুরভুরিয়া ছড়ার দুই পাড়ে ছুটে আসছে সৌন্দর্যের টানে। বিশেষ করে বিকেলের পর থেকে পুরো এলাকা হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। কেউ পরিবার নিয়ে, কেউ বন্ধুদের সঙ্গে এসে কাশবনের ফাঁকে ফাঁকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেকে ছড়ার এপার-ওপার ঘুরে সাদা কাশফুলের সমুদ্রের মতো দৃশ্য উপভোগ করছে। ভুরভুরিয়া ছড়াতে পানি এখন কম থাকায় সহজেই দর্শনার্থীরা এপারে-ওপারে যেতে পারছেন। ফলে দু’পাড়জুড়ে কাশফুলের সৌন্দর্য দেখার সুযোগ মিলছে কাছ থেকে।

কাশফুলের শুভ্রতা আর বাতাসে দুলে ওঠা দৃশ্য মন কেড়ে নিচ্ছে সবার। মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তোলা ও সেলফি তোলার ধুমও চলছে সমানতালে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা কাশফুলের বাগানকে ঘিরে নানা ভঙ্গিতে ছবি তুলতে ব্যস্ত থাকছেন। ফলে জায়গাটি এখন স্থানীয় পর্যটনের নতুন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। শ্রীমঙ্গল শহরের শাহ মোস্তফা জামিয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছাত্র আব্দুল করিম মেরাজ জানান, ‘কাশফুলের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে মনে হয় যেন সাদা মেঘের ভেতর দিয়ে হাঁটছি। এত সুন্দর দৃশ্য এর আগে খুব একটা দেখিনি।’

একইভাবে শাহ মোস্তফা জামিয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিক আব্দুল্লাহ আল মুনসুর বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর এখানে আসি। বাচ্চারাও খুব আনন্দ পায়। শহরের ভিড়ভাট্টা ছেড়ে পরিবার নিয়ে এখানে কিছু সময় কাটানো সত্যিই দারুণ।’ প্রকৃতিপ্রেমীরা মনে করছেন, এই কাশবনকে ঘিরে যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা ও পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা যায়, তবে শ্রীমঙ্গলের পর্যটনে এটি একটি নতুন সংযোজন হয়ে উঠতে পারে। কারণ কাশফুল শুধু প্রকৃতির শোভা নয়, বাঙালির শরৎকালীন সাংস্কৃতিক আবেগেরও অংশ। প্রকৃতির এমন অনিন্দ্যসুন্দর দৃশ্য দেখতে ভুরভুরিয়া ছড়া এখন দিন দিন পরিণত হচ্ছে শ্রীমঙ্গলের জনপ্রিয় মিলনস্থলে।