হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জ-হোসেনপুর গফরগাঁও মহাসড়কের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত সেতুর মাঝখান থেকে ব্রীজ বেয়ারিং প্যাড চুরি করে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে করে প্রতিদিন ভারী যানবাহন চলাচল করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
জানাযায় ,এই সেতুটি পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দ্রুত সংযোগ স্থাপনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়ককে ময়মনসিংহের গফরগাঁও হয়ে ভালুকার সাথে সংযুক্ত করে গাজীপুর, মাওনা ও ভালুকা, শিল্পাঞ্চলের পণ্যবাহী ট্রাকগুলো যানজট ছাড়াই চট্টগ্রাম ও সিলেট অভিমুখে চলাচল করে এ সেতুটি দিয়ে। কিন্তু সেতুর নিরাপত্তাহীনতা ও রক্ষণাবেক্ষণের তদারকির কারনে তা এখন ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেয়ারিং প্যাড চুরি যাওয়ায় সেতুর নির্দিষ্ট স্থানটি ফাঁকা রয়েছে ও প্রতিদিন সেটি আরও বেড়ে চলছে। বেয়ারিং প্যাড একটি সেতুর ভার সঠিকভাবে বণ্টন, ভূমিকম্প প্রতিরোধ এবং তাপমাত্রা পরিবর্তনের সময় সেতুকে সুরক্ষিত রাখার গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। এটি না থাকায় সেতুটি এখন অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটি দুই দশক আগে নির্মাণ করা হলেও এর রক্ষণাবেক্ষণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ করেছেন যানবাহন চালক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলেন, সেতুর নিচের বেজমেন্টের মাটি সরে গেলেও এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই।
স্থানীয়রা প্রকৌশলী জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের আশেপাশের ২ কিলোমিটার এলাকাগুলোতে বালু উত্তোলন ও মাটি খনন বন্ধের সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় সেতুর কাছ থেকেই নিয়মিত বালু উত্তোলন ও মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে, যা সেতুর স্থায়িত্বের জন্য বড়ধরনের হুমকি।
সেতুর নিচের এলাকা মাদকসেবীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। যদিও এলাকাটি পাগলা থানার আওতায় থাকায় এখানে একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, তবুও নিয়মিত টহল বা নজরদারি নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ট্রাকচালক বাচ্চু মিয়া দৈনিক সংগ্রাম ও সিএন বাংলা টিভি কে বলেন,প্রতিদিন মালামাল নিয়ে এই সেতু পার হই। নিচে তাকালে দেখি একটা জায়গা ফাঁকা। মনে হয় যেকোনো সময় ধসে যাবে। ভয় লাগে,কিন্তু বিকল্প পথ নেই যে আমরা চলাচল করি।
স্থানীয় অটোচালক শরিফ মিয়া বলেন, রাত হলে এই সেতুতে অন্ধকারে কিছুই দেখা যায় না। হেডলাইটের আলোতেও স্পষ্ট বোঝা যায় না কোথায় গর্ত, কোথায় ফাঁকা। ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে গাড়ি পারাপার করি।
ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাশার মো. সাদ্দাম হোসেন জানান, “চুরি হওয়া বেয়ারিং প্যাড দ্রুত লাগানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া সেতুতে পর্যাপ্ত লাইটিং ব্যবস্থাও স্থাপন করা হবে।” বর্তমানে এই সেতুতে কোনো আলো না থাকায় রাতের বেলায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাচ্ছে।