ঘিওর (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা : মানিকগঞ্জে কৃষি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ হুমকিতে পড়েছে। কীটনাশকের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে মাঠ পর্যায়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন ভয়াবহ চিত্র। বারসিক, গওঝঊজঊঙজ এবং উরধশড়হরধ-এর সহযোগিতায় পরিচালিত এই গবেষণায় জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলায় ২১ জন কৃষকের ওপর তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সম্প্রতি মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বারসিক মানিকগঞ্জ রিসোর্স সেন্টার গবেষণার ওপর সংবাদ সম্মেলন গবেষকরা বলেন।

কৃষকরা বহু বছর ধরে ক্ষতিকর ও সরকারি নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে আসছেন। যেমন: কার্বন্ডাজিম, গ্লাইফোসোট, ক্লোরেন্টাডেন, টক্সাফেন ইত্যাদি। এসব বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে শুধুমাত্র ফসলের নয়, প্রাণিকুল ও মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

সিংগাইর উপজেলার রাজনগরের কৃষক মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, এক মৌসুমে ৫০ বিঘা জমিতে ‘গন্ডার’ নামক ছত্রাকনাশক প্রয়োগে সরিষা ক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়। একইভাবে ভিন্ন কৃষকের ১০টি গরু, ১১টি হাঁস ও একটি পুকুরের মাছ মারা যায়, আনুমানিক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১১ লক্ষাধিক টাকা। প্রয়োগকারীদের মধ্যে অনেকেই বমি, মাথা ঘোরা, ত্বকে চুলকানি, শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। কৃষক মনোয়ার হোসেন বলেন, কীটনাশক প্রয়োগের পর শরীরে তীব্র জ্বালাপোড়া শুরু হয়।

একাধিক কৃষক জানিয়েছেন, তারা চিকিৎসার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ করলেও বড় কোনো চিকিৎসা করান না। গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগির বিষক্রিয়া সম্পর্কিত সমস্যাগুলো হয় আরও মর্মান্তিক। জমির ঘাস খেয়ে একাধিক গরু মারা যায়। হাঁস-মুরগি বিষাক্ত খাবার বা মাছি খেয়ে ছটফট করতে করতে মারা যায়। সাবান বা ডিটারজেন্ট দিয়ে গোসল করানোর মাধ্যমে কিছু প্রাণী বাঁচানো সম্ভব হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাণীগুলো মারা যায়।