বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মজলুম জননেতা এটিএম আজাহারুল ইসলাম বলেছেন- আজ দেশের ক্রান্তিকালে যুব সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি গতকাল শুক্রবার বিকেলে বদরগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় মডেল উচ্চ বিদ্যালয় অডিটরিয়ামে আয়োজিত যুব সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সভাপতি উপাধ্যক্ষ মাসুদ রানা সমাবেশে সভাপতিত্বে করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মজলুম জননেতা এটিএম আজাহারুল ইসলাম বলেন- আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ’৬৯-এর গণআন্দোলন, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী এবং ’২৪-এর স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলনে যুব সমাজ ঐতিহাসিক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এর মধ্যে দেশের বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। এটা রক্ষা করতে হবে যুব সমাজকে। তিনি বলেন, আমরা অতি দ্রুত নির্বাচন চাই, তবে তার আগে খুনি স্বৈরাচারের দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার চাই। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। এজন্য কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে স্থায়ী পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা কাউকে ব্যালট ডাকাতি করতে দেব না। এজন্য যুব সমাজকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা সচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে সকল মানুসের অংশ গ্রহনের মাধ্যমে সৎ লোকের শাষন এবং আল্লাহর আইন সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এর মাধ্যমে দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চাই। দুর্নীতি সমাজ গড়তে চাই। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। অতিতে জামায়াতের ২ মন্ত্রী ৩টি মন্ত্রনালয় পরিচালনা করেছে। একটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ কেউ করতে পারেনি। এটাই জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ। এর আগে সকালে মজলুম জননেতা এটিএম আজাহারুল ইসলাম সকালে উপজেলা সদরের ষ্টেশন রোডে বদরগঞ্জ ইসলামী পাঠাগার ও সমাজ কল্যান সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত ”ফ্রি মেডিকেল সেন্টারের” উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন পাঠাগারের সভাপতি অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক সরকার। দুপুরে মজলুম জননেতা এটিএম আজাহারুল ইসলাম বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের উদ্যোগে স্থানীয় বালুয়াভাটা প্রফেসর পাড়ায় মেরিট কেয়ার একাডেমী অডিটরিয়ামে আয়োজিত মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা কামরুজ্জামান কবির সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। যুব ও মহিলা সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও রংপুর জেলা আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী। বক্তব্য রাখেন রংপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ এনামুল হক, জামায়াতে ইসলামী রংপুর শহর শাখার সাবেক আমীর অধ্যাপক রুহুল কুদ্দুস, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হান্নান খান, মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতের আমীর মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান শিমুল, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর শাহ্ মুহাম্মদ রুস্তম, সেক্রেটারি অধ্যাপক মুহাম্মদ মিনহাজুল ইসলাম, উপজেলা যুব বিভাগের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আল আমীন প্রমুখ।

এটিএম আজাহারুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট জালিম শাহী বিগত ১৪ বছর আমাকে মিথ্যে মামলা এবং কাল্পনিক সাক্ষ্যে ফাঁসির আদেশ দিয়ে জেলে রেখে কণ্ঠ রোধ করেছিল। আল্লাহর অসীম রহমতে আজ আমি মুক্ত। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত নিজেকে উৎর্সগ করে রাখবো ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, বিগত সময়ে জামায়াতে ইসলামসহ ভিন্নমতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে হত্যা, জেল-জুলুমের শিকার করেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার। আল্লাহ এই জুলুমের পরিনতিতে জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে রংপুরের গৌরব আবু সাঈদসহ ছাত্র যুবকদের জীবন উৎসর্গের বিনিময়ে জালিমের পতন ঘটেছে। দেশ-জাতির কল্যাণে সেদিন সে বুক পেতে দিয়েছিল তরুনরা। এর অনির্বায পরিনতিতে জালিমরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। আপনারা সহযোগিতা করলে আগামীতে এই এলাকার সেবা করবো ইনশাআল্লাহ।