ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা : তীব্র দাবদাহের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গরমে বৃদ্ধ, শিশু, নারী, দিনমজুর, পেশাজীবী সবার মধ্যে হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে। তারা ঘর থেকে বের হবার সাহস করছে না। চলমান তাপপ্রবাহের কারণে সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের মানুষের মধ্যেও এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ঘাটাইলে বর্তমানে ইরি-বোর ধান কাটার মৌসুম চলছে। টানা দাবদাহের কারণে ধানাকাটা শ্রমিকসহ সকল পেশার মানুষ চরম অস্বস্তিতে পড়েছে। সকালে গরমের তীব্রতা কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের প্রখরতা ও গরমের তীব্রতা বাড়তে থাকে। দুপুরের সময় গরমের তীব্রতা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। টানা তিন দিন ধরে চলছে এ অবস্থা । এ সময় শ্রমিকদের ফসলের মাঠে থাকা সম্ভব হয় না। তখন তারা গাছের ছায়ায় একটু প্রশান্তি খোঁজে।

কৃষক ফজর আলী বলেন, ‘ধানের ক্ষেতে থাহন যায় না, গাছের তলায় বহন যায় না, কি করুম ধানতো কাটন লাগবো, বৃষ্টি অইলে তো আরো ভোগান্তি। কি করুম সইয়া গেছে গা’ সন্ধ্যার আবহাওয়ার গুমোট পরিবেশ এবং রাতের ভ্যপসা গরমে জনজীবনে চরম ভোগান্তি নেমে এসেছে। গরমের কারণে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে বৃদ্ধ নারী, শিশু ও স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। রিকশাচালক ও হকাররাও পড়েছে চরম বিপদে।

ভ্যানচালক মালেক মিয়া বলেন, প্রচন্ড গরমের কারণে রাস্তায় যাওন (বের) যায় না। রাস্তার ভ্যান লইয়া যাই নাই। তাই আজকে কোন কামাই নাই দিন কেমনে চলবো হেই চিন্তায় আছি। সড়কে প্রতিদিন নানা ধরনের হকার থাকে। তবে গত দুই দিন ধরে সড়কে হকারের সংখ্যা কমে গেছে।

বাদাম বিক্রেতা সোলায়মান বলেন, গরমে রাস্তায় টেকা যায় না, মানুষও কম। বিক্রি নাই বললেই চলে। কলা বিক্রেতা ছামাদ মিয়া বলেন, ‘গরমে রাস্তায় থাহন যায় না কি আর কলা বেচুম।’

গৃহবধূ মমতা বেগম বলেন, মানুষ যেখানেই দাঁড়াচ্ছে বা বসছে সেখানেই ঘেমে যাচ্ছে। ঘরের মেঝে, গাছ তলা কোথাও স্বস্তি পাচ্ছে না। নদী ও পুকুরের পানি গরম হয়ে যাওয়ায় বার বার গোসল করেও মানুষ গরম নিবারন করতে পারছে না। তারপরও একটু স্বস্তি পাওয়ার জন্য পুকুরের পানিতে গাঁ ভিজিয়ে প্রশান্তি খুজছে অনেকেই। শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে পরিবারের লোকজন। এদিকে অতিরিক্ত গরমের সাধারণ মানুষের করণীয় বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে জনগণকে সচেতন করছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আবু নাঈম মোহাম্মদ সোহেল বলেন, দাবদাহের কারণে মানুষ জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় ও শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এ বিষয়ে সাধারণ জনগণ ও হাসপাতালে আগত রোগীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।