আল-হেলাল : নালিতাবাড়ি শেরপুরঃ গারো পাহাড়ে জনপদ থেকে হারিয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী কাশবন। ঋতু অনুসারে ভাদ্র-আশ্বিন জুড়ে শরৎ কালের রাজত্ব। নিকট অতীতেও দেখা গেছে শরৎ কাল এলেই গ্রাম-বাংলার ঝোপ-ঝাড়, রাস্তা ঘাট ও নদীর দুই ধারসহ আনাচে কানাচে কাশফুলের মন মাতানো নাচানাচি। সেগুলো আর চোখে পড়ছে না। কাশবনের ফুলগুলো দোল খেতো একটার সঙ্গে আরেকটাটা। এ সময় অজান্তেই মানুষের মনে ভিন্ন রকম আনন্দের ঝিলিক বয়ে যেতো। “কবি জীবনানন্দ দাশ শরৎকে দেখেছেন বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।” শরতের এই অপরূপ রূপ দেখে যুগ্ধ কবি অবলীলায় পৃথিবীকে আর দেখার প্রয়োজন নেই সিদ্ধান্ত নেন। শরৎ শুভ্রতার ঋতু। শরৎ মানেই প্রকৃতি, শরৎ মানেই নদীর তীরে তীরে কাশফুলের সাদা হাসি। তবে এবার একটু দেরিতেই কাশফুল ফুটতে দেখা যায়। বাংলার প্রকৃতিতে শরতের এই দৃশ্য দেখলে যে কেউই মুগ্ধ হয়ে যায়। জানা যায়, প্রাচীনাকাল থেকেই এ দেশের মাঠে-ঘাটে কাশ ফুল ফুটতে দেখা যায়। এমনকি প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে এদেশে কাশফুল ছিলো। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশফুলের ঝাড় বেরে উঠে। কাশফুলের বৈজ্ঞানিক নামঃ ঝধপপযধৎঁসংঢ়ড়হঃধহবঁস. এরা ঘাস জাতীয় জলজ উদ্ভিদ। চিরলপাতার দুই ধারে খুবই ধার পালকের মতো নরম এর সাদা ফুল। কাশফুলের অন্য একটি প্রজাতির নাম কুশ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ পুরান, এ কুশের স্থান খুব উঁচুতে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রাচীন গ্রন্থ ‘কুশজাতক কাহিনী অবলম্বন করে শাপমোচন, নৃত্যনাট্য রচনা করেছেন।

কাশফুল মনের কালিমা দূর করে। শুভ্রতা অথের্র ভয় দুর করে শান্তির বারতা বয়ে আনে। শুভ কাজে ব্যবহার করা হয়। কাশফুলের পাতা বা ফুল। নদীর দু‘ধারে আইলে শরৎ কালের সেই চিরচেনা দৃশ্য আর দেখা যায় না। কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে কাশবন। এখন গ্রামবাংলার বিছিন্ন ভাবে থাকা যে কয়টি কাশফুল চোখে পড়ে সেগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সেখানে এখন তৈরি হয়েছে মৌসুমী ফসলের ক্ষেত। কাশ ফুল ছিঁড়ছে একটি শিশু। নদীর পাড়ে গড়ে উঠা শহর গুলো এ ভাবেই শরতের সৌন্দর্যকে শুইয়ে দিচ্ছি সাদা মেঘের ভেলায়। সাধারন মানুষের বিনোদন প্রকৃতিতে দেখার শখ-আহ্লাদ যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। এ কাশবন চাষে বাড়তি পরিচর্য! ও সার প্রয়োগের প্রয়াজনও নেই। আপনা থেকেই অথবা বীজ ছিটিয়ে দিলেই কাশবনের সৃষ্টি হয়ে থাকে। শরৎ শুভ্রতার ঋতু। শরৎ মানেই স্নিগ্ধতা। প্রকৃতিতে শরৎ মানেই নদীর তীর তীরে কাশফুলের সাদা হাসি। নদীর দুইধারে, জমির আইলে শরৎকালের সেই চিরচেনা দৃশ্য আর দেখা যায়না। কালের আবর্তে হারিয়ে যা”েছ কাশবন। এখন গ্রাম-বাংলার বি”িছন্নভারে আপনা থাকা যে কয়টি কাশবন চোখে পাড়ে সেগুলোও হারিয়ে যাচ্ছে।

সীময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সেখানে এখন তৈরি নতুন ধানের সমারোহ। কৃষকের মনে নবীন আশা সাজ সাজ রব। দোয়েল কোরেলের কুজনে মুখরিত পল্লী গ্রাম, মাঠ-ঘাট জনপদ। বিশেষ ফরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে প্রহর গুনা শুরু হলো এই শরতের বৈলাশ ছেড়ে দুর্গতিনাশিন দুর্গা আসবেন তাদের গৃহে। নদীর পাড়ে কাশ ফুলের জেগে উঠার আভাস দেখেই বাতাসে রটে গেছে শরৎ এসেছি।