বাগমারা (রাজশাহী) সংবাদদাতা : রাজশাহীর বাগমারা ও তার পার্শ¦বর্তী এলাকায় হিমাগারে (স্টোর) সংরক্ষণ করা আলু নিয়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। আলুচাষিরা জানান, মওসুমে আলু বিক্রির পর তারা পুনরায় আলু চাষের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও বেশী দামের আশায় আলু স্টোরে মজুত করেন। কিš‘ বর্তমানে বাজারে আলুর চাহিদা না থাকায় দাম নি¤œমূখী। এতে করে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের লোকশানের পাশাপাশি হিমাগারের মজুত আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হিমাগার মালিকরাও। আলুর দাম গত বছর বাড়তিতে সরকারী ভাবে রেট বেঁধে দেয়াসহ প্রশাসনের হুমকিতে কৃষক ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েছিল। কিš‘ এবারে দাম কমে সরকারী ভাবে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। আলুচাষী এবং হিমাগার মালিকদের সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বিঘায় আলু চাষে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা খরচ হয়। এতে উৎপাদন বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ মন। হিমাগার ফটকে এলাকাভেদে প্রতি কেজি আলুর দাম এখন ১২ থেকে ১৩ টাকা। অথচ প্রতি কেজিতে উৎপাদন কৃষকের ১৭ টাকা খরচ হয়েছে। এর সঙ্গে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ যোগ করলে হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর কেজিতে খরচ প্রায় ২৫ টাকা দাঁড়ায়। বর্তমানে হিমাগারে সাড়ে ১২ টাকা থেকে ১৩ টাকায় প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে। আর স্থানীয় বাজারে খুচরা পর্যায়ে ওই আলু ১৫ থেকে ১৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এবার কেজিতে আলুর গড় উৎপাদন খরচ ১৫ টাকা ছিল। তার সঙ্গে হিমাগার ভাড়া যোগ হবে। ফলে সরকারি হিসাবেই প্রতি কেজি আলুতে কৃষক লোকসান গুনছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এবার আলুর দামের যে অবস্থা, তাতে অনেক কৃষকই আগামী বছর আলু চাষে বিমুখ হতে পারে। ফলে আলুর দাম আগামী বছর আবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। গত বছর প্রতি কেজি আলু ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এমনকি এবার মৌসুমের শুরুতে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছিল। আর গত বছরের ওই মৌসুমের আলুর কেজি ছিল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা। অভিজ্ঞমহলের মতে, সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করতে পারে। বর্তমানে আলুর দাম না পাওয়া এবং সংরক্ষণের অভাবে বিপুল লোকসানের মুখে পড়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা দিশেহারা। সিংহভাগ আলু চাষীই এখন দেনায় পড়েছেন। একই ভাবে স্থানীয় কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা আলুর দুরাবস্থাকে সরকারী ব্যবস্থাপনাকে দোষছেন। বাজার ব্যবস্থায় আলু গুলো দেশ ও দেশের বাইরে নেয়ার ব্যবস্থা থাকলে তাদের দুরাবস্থা কমতো। সরকারী ভাবে কোন ব্যবস্থা না থাকায় আক্ষেপ করে তাঁরা বলেন, স্টোরজাত আলুর যে অবস্থা তা দেখার কেউ নেই।