দিরাই সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে জলমহাল থেকে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোউৎসব। জলমহালটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ইজারা নিলেও সুবিধা নিচ্ছেন স্থানীয় রাজনৈতিক দলের কতিপয় সুবিধাবাদি লোক। কৃষি জমি ধ্বংস করে ভূ-গর্ভস্থল থেকে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেদারছে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে, উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের নোয়াগাঁও এলাকার জুরী পাঞ্জুরী বিল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের এ দৃশ্য দেখা যায়। কাঁদা মাটি মিশ্রিত এসব বালু পার্শ্ববর্তী দিরাই -শাল্লা মহা সড়কের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে । যার ফলে মহাসড়ক নির্মাণকাজ ঝুঁকি পুর্ন করে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ড্রেজারের মালিক মাদারীপুরের শহিদ জানান, তাড়ল গ্রামের জুয়েল চৌধুরীর মাধ্যমে এখানে এসেছি, ১৭ দিন যাবত বালু উত্তোলন করছি, মনে হচ্ছে এ কাজে আমার লোকসান হবে।তবে অভিযুক্ত জুয়েল চৌধুরী বলছেন, আমি এসব জানিনা।

নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক আব্দুল হেকিম মিয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন আগে এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন ৩০ থেকে ৪০ ফুট গভীর করে ভিট বালু উত্তোলন করলে পার্শ্ববর্তী শত শত একর বোরো জমি ধসে পড়তে পারে। কৃষকদের বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌসুম বোরো। এই জমি ধসে পড়লে পুরো এলাকার কৃষি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।

নোয়াগাঁও জুরী পাঞ্জুরী মৎজীবী স: স: লি: সভাপতি ওয়াহিদ আলী জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন কারীরা আমাকে আমাদের জলমহাল থেকে বালু উত্তোলন করার জন্য ডিসি স্যারের অনুমোদনকৃত একটি কাগজ দেখান এবং আমি বাধা দিতে চাইলে ডিসি স্যার নাকি বলছেন আমি যেন বাধা না দেই। তাই আমি বালু উত্তোলনে বাধা দেই নাই। জুয়েল মিয়া আমাদের সমিতিকে বালুর ফুট প্রতি দুই টাকা করে দিবেন বলে জানান।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার হোসেন বলেন, ড্রেজার দিয়ে উত্তোলনকৃত বালু আমরা উনাদের কাছ থেকে ৮ টাকা ফুট দরে নিতেছি। গত কয়েক দিন আগে ডিসি মহোদয় পরিদর্শন করে গিয়েছেন।বালু উত্তোলন বৈধ নাকি অবৈধ তা জানি না,আমার স্যার বিদেশে আছেন উনি বলতে পারবেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনজিব সরকার জানান, বিল খনন করে মাছের অভয়ারণ্যে তৈরি করা যায় কিন্তু মাটি বিক্রি করা অবৈধ। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে,ড্রেজার মেশিনসহ ব্যাবহৃত পাইপ রাষ্ট্রের অনুকুলে বিনষ্ট করা হয়েছে। বিলের কাদা মাটি সড়কের কাজ ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলার আশঙ্কা রয়েছে