সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড মাছুমপুর নতুনপাড়ায় এক ভিক্ষুক বৃদ্ধার কাছ থেকে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ভিক্ষা করে জমানো দুই বস্তা টাকা উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে পাইওনিয়ার কেজি অ্যান্ড হাই স্কুলের পেছনে স্থানীয়রা সেই টাকা গুণছেন। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় ৬৫ বছর বয়সী মোছাঃ সালেয়া বেগম দীর্ঘ চার দশক ধরে ভিক্ষা করে আসছেন। তিনি সিরাজগঞ্জ কওমি জুট মিলে বারান্দায় থাকেন। কখনো নিজের প্রয়োজন কিংবা অসুস্থতার জন্যও টাকা খরচ করতেন না। তার একমাত্র মেয়ে মোছাঃ শাপলা খাতুনের স্বামী মাছুমপুর পশ্চিমপাড়ার রিকশাচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম।

মোছাঃ শাপলা খাতুন বলেন, মা আমাদের সঙ্গে থাকতো না, একাই থাকতো। আজ তার থাকার জায়গা থেকে অনেক টাকা পাওয়া গেছে। এখন আমি মায়ের কাছে আছি। এই টাকা দিয়ে তার চিকিৎসা করানো হবে।

ভিক্ষুক সালেয়া বেগমের মেয়ের জামাই মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, সে অসুস্থ ছিল। আমি বলেছিলাম, আপনার চিকিৎসা করাবো, কিন্তু কার কাছে কত টাকা আছে, সেটা বলতে চাইতো না। আজ এলাকাবাসী গিয়ে তার বারান্দার নিচ ও আশপাশ থেকে টাকা উদ্ধার করেছে। এখন সবাই মিলে গুণছে।

মোঃ শুভ নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, আমি চা খাওয়ার সময় দেখি, রিকশায় করে দুই বস্তা টাকা নিয়ে আসা হচ্ছে। সালেয়া বেগম প্রায় ৪০ বছর ধরে ভিক্ষা করেন। আমরা জানতাম না, তার কাছে এত টাকা আছে। দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকার মতো হতে পারে।

টাকা গোনায় অংশ নেওয়া মোঃ রাশেদুল ইসলাম আলম ঢাকা স বলেন, সালেয়া পাগলা দীর্ঘদিন ধরে সিরাজগঞ্জ কওমি জুট মিলে বারান্দায় থাকেন। দুই মাস ধরে তিনি অসুস্থ। আমার ধারণা ছিল, তার কাছে কিছু টাকা আছে। পরে এলাকাবাসী গিয়ে দুই বস্তা টাকা পায়। অনেক টাকা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন টাকাগুলো গোনা হচ্ছে, এবং এগুলো তার চিকিৎসায় ব্যয় করা হবে।

সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোঃ শিপু বলেন, ওই ভিক্ষুক প্রায় ৪০ বছর ধরে টাকা গুছিয়েছে। বর্তমানে সে অসুস্থ। দুই বস্তা টাকা উদ্ধারের পর এলাকাবাসী জনসম্মুখে গুনছে। সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, টাকাগুলো তার চিকিৎসার জন্য ব্যয় করা হবে।