মোগর খাল পুনরুদ্ধার ও খনন কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করতে শুক্রবার সকাল থেকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী প্রায় তিন কিলোমিটার কাদামাটির পথ পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখেন পুরো খালপাড়। ভোগড়া বাইপাস থেকে শুরু করে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত দীর্ঘ এই পথচলায় তার সঙ্গে ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের সচিব আমিন আল পারভেজ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ রাসেল, সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ হোসেন, মাইদুল ইসলাম, মাহমুদা আক্তারসহ সেনাবাহিনীর সদস্য ও অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তারা।
এসময় প্রশাসক জানান, সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রাথমিকভাবে খাল থেকে ময়লা অপসারণ ও পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে খালের বিভিন্ন অংশে ভেকু (খননযন্ত্র) পৌঁছানো কঠিন হওয়ায় কিছু জায়গায় খননকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এরপর পর্যায়ক্রমে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খালের প্রস্থ বৃদ্ধি করে স্থায়ী সম্প্রসারণ কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা ঘুরে দেখে প্রশাসক অভিযোগ করেন, বিআরটি প্রকল্পে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ নকশা ও ভুল বাস্তবায়ন এই সমস্যার অন্যতম কারণ। তিনি জানান, “পানিবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশন নিজস্ব উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রশাসক আরও বলেন, এই খাল শুধু একটি পানি চলাচলের পথ নয়, এটি নগরবাসীর ভবিষ্যতের নিরাপত্তা, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যরক্ষার প্রতীক। আমরা পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখছি খালের মধ্যে পলিথিন, লেপ, তোশক, বালিশ, এমনকি গৃহস্থালী সামগ্রীর স্তূপ পাওয়া যাচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে।
তিনি নগরবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানান, আপনারা যদি সচেতন থাকেন, খালের পাশে ময়লা না ফেলেন এবং আমাদের পাশে থাকেন, তবে গাজীপুর একদিন পরিচ্ছন্ন, বাসযোগ্য ও আধুনিক নগরীতে পরিণত হবেই।
উল্লেখ্য, রাজউকের নকশায় ‘গাছা খাল নামে পরিচিত এই মোগর খাল পূর্ব চান্দনা, খাইলকুর, হায়দারাবাদ হয়ে টঙ্গী নদীতে মিশেছে। দখল, দূষণ ও অবহেলার কারণে খালটির পানিনিষ্কাশন কার্যকারিতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। এবার সেটিকেই পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে গাজীপুর মহানগরীর ভবিষ্যৎ পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় প্রাণ ফেরাতে চায় প্রশাসন।