আবু সাঈদ, চান্দিনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা : পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষেরই একেকটি স্বপ্ন থাকে। সেই স্বপ্ন পূরণে মানুষ তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যায়। তবে কেউ যদি উচ্চশিক্ষা শেষ করে কৃষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, সেটি অনেকের কাছেই অদ্ভুত মনে হয়। কিন্তু কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের লোনাকান্দা গ্রামের আবু আমিন ঠিক এমনই এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।

প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ শেষ করার পর তিনি কাজ করেছেন দেশের নামকরা একাধিক টেলিকম কোম্পানিতে। মাসে বেতন পেতেন লক্ষাধিক টাকা। তবুও শহুরে জীবনে তার মন বসেনি। গ্রামের মাটি, মানুষ আর প্রকৃতির টানে চাকরি ছেড়ে ফিরে এসেছেন নিজ এলাকায়।

রাসায়নিক সারের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষ ও প্রকৃতিকে রক্ষা করার চিন্তা থেকেই শুরু করেন কেঁচো সার উৎপাদন। প্রথমে স্বল্প পরিসরে শুরু করলেও এখন তিনি প্রতি মাসে প্রায় তিন মেট্রিক টন কেঁচো সার উৎপাদন করছেন। এখান থেকে তার মাসিক আয় প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। তার উৎপাদিত সার কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনীসহ দেশের প্রায় ১০ থেকে ১২টি জেলায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি সরাসরি বিক্রির পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও সার বিক্রি করছেন। তবে শুরুটা মোটেও সহজ ছিল না।

আবু আমিন জানান, “শুরুর দিকে প্রতিবেশীরা একে ভালোভাবে নেয়নি। অনেকে বলত, একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে সারাদিন কেঁচো ও গোবর নিয়ে কাজ করাটা পাগলামি। কিন্তু এখন তারা নিজেরাই আমার কাছে আসে পরামর্শ নিতে।”

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন- তিনি আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছেন। কাজটি বড় পরিসরে করতে হলে পুরো গ্রাম টি কে কম্পোস্ট গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সার তৈরিতে ব্যবহৃত কাচামাল বেশি না পেলে সার বেশি উৎপাদন করা সম্ভব নয়। সরাসরি বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনে তার প্রচুর গ্রাহক রয়েছে। স্বল্পমূল্যে বিক্রি করায় তার সারের চাহিদা ব্যাপক। আমরা আশাবাদী সে অনেক বড় কৃষি উদ্যোক্তা হবে।