শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাব জীবন দিয়ে আমাদেরকে দায়বদ্ধ করে গেছেন। তার হত্যার বিচার নিয়ে কোন টালবাহানা সহ্য করা হবে না। শহীদ তুরাবের বিচার ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে সহযোগিতা করতে হবে।

জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলীতে নিহত দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট প্রতিনিধি শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাব এর ১ম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট প্রেসক্লাব আয়োজিত আলোচনা সভা, তুরাব স্মৃতি পদক প্রদান ও দোয়া মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন। গত শনিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবের আমীনুর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. সাজেদুল করিম বলেন, ফ্যাসিস্টদের দুর্বিসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতেই দেশে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান হয়েছে। দেশকে ভালবেসেই এতে প্রাণ দিয়েছেন তুরাবসহ শহীদরা। তাদের রক্তের সাথে আমাদের শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তুরাব স্মৃতি পদক প্রদান অব্যাহত রাখার আহবান জানান তিনি।

সভায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম পিপিএম বলেন, পুলিশ সরকারের হয়ে কাজ করবে কিন্তÍু তার মধ্যে পেশাদারিত্ব থাকবে না তা হতে পারে না। ভোট ও গণতন্ত্রের সংস্কৃতি না থাকায় পুলিশ দিয়ে সব কিছু করানোর কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। এ জন্য আমরা লজ্জিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, অপরাধ কর্মকা-ে পুলিশ সদস্য জড়িত হলে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে। তুরাব হত্যাকা-ের বিষয়টি নিবিড়ভাবে দেখা হচ্ছে। খুব দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে বলেও জানান এসএমপি কমিশনার।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সত্যিকারে তুরাব হত্যার বিচার চাইলে আটঘাট বেঁধে নামতে হবে। এ জন্য একটি আইনজীবী প্যানেল গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। সেই সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সাংবাদিক তুরাবের স্মৃতি তুলে ধরতে সিলেট সিটি কর্পোরেশন, প্রশাসনসহ অন্যান্য সংস্থার সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিতে সিলেট প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান।

সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী, সিলেট জেলা বারের সাবেক সভাপতি ও সিলেট প্রেসক্লাবের আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষক জোটের আহবায়ক প্রফেসর ফরিদ আহমদ, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. জিয়াউর রহমান চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি খালেদ আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বদর, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল কবীর পাভেল, ইমজা সেক্রেটারী সাকিব আহমদ মিঠু, দৈনিক নয়া দিগন্তের ব্যুরো প্রধান আবদুল কাদের তাপাদার, দৈনিক প্রভাতবেলা সম্পাদক কবীর আহমদ সোহেল, দৈনিক জালালাবাদের প্রধান প্রতিবেদক আহবাব্ মোস্তফা খান। অনুষ্ঠান শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন সিলেট প্রেসক্লাবের পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক কবির আহমদ। মোনাজাত পরিচালনা করেন ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক।

সিলেট প্রেসক্লাব প্রবর্তিত ‘তুরাব স্মৃতি পদক’ লাভ করেছেন দৈনিক সিলেটের ডাক এর সিনিয়র রিপোর্টার ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ কাউসার চৌধুরী। এছাড়া বিশেষ বিবেচনায় পদক লাভ করেন ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আশকার আমিন ইবনে লস্কর রাব্বী।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসএমসপির ডিসি (উত্তর) সজিব খান, এসএমসপির মিডিয়া অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, নারী উদ্যোক্তা রোটারিয়ান সেলিনা চৌধুরী, কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক, অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, সিলেট প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য আব্দুল মালিকা জাকা, সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান আতা ও এম এ হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস সমর, সহসভাপতি বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক শুয়াইবুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ আনিস রহমান, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক শেখ আব্দুল মজিদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ আশরাফুল আলম নাসির, সদস্য চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, কামকামুর রাজ্জাক রুনু, মো. মুহিবুর রহমান, মো. ফয়ছল আলম, মো. আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, আনাস হাবিব কলিন্স, নূর আহমদ, ইউনুছ চৌধুরী, সিন্টু রঞ্জন চন্দ, গোলজার আহমেদ, নৌসাদ আহমেদ চৌধুরী, প্রত্যুষ তালুকদার, মো. দুলাল হোসেন, লুৎফুর রহমান তোফায়েল, এম রহমান ফারুক, শফিক আহমদ শফি, অনিল কুমার পাল, সহযোগী সদস্য সেলিম আউয়াল, হুমাযুন কবির লিটন ও এইচ এম শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।