টঙ্গীতে রাসায়নিক গুদামের আগুন নেভাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ আরেকজন ফায়ার ফাইটার মারা গেছেন। টঙ্গী ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার মোহাম্মদ নুরুল হুদা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল বুধবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান। দুদিন আগের ওই অগ্নি দুর্ঘটনায় এ নিয়ে দুজন ফায়ার ফাইটারের মৃত্যু হল। আরো দুজন বর্তমানে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তালহা বিন জসিম বলেন, ৩৮ বছর বয়সী নুরুল হুদার শরীরের পোড়ার মাত্রা ছিল ১০০ শতাংশ।
গত সোমবার টঙ্গীর সাহারা মার্কেটে একটি রাসায়নিকের কারখানায় আগুন নেভাতে গিয়ে চার ফায়ার ফাইটার দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে শামীম আহমেদ (৪০) মঙ্গলবার বিকালে মারা যান। তার শরীরেও পোড়ার মাত্রা ছিল ১০০ শতাংশ। বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন চিকিসাধীন আছেন ফায়ার ফাইটার জয় হাসান ও ফায়ার অফিসার জান্নাতুল নাঈম। তাদের মধ্যে জান্নাতুল নাঈমের শরীরের ৪২ শতাংশ এবং জয়ের ৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, টিনশেডের গুদামটি একটি পোশাক কারখানার। সোমবার বিকালে হঠাৎ সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর ভেতরে থাকা লোকজন দৌড়ে বের হয়ে আসেন। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নেভানোর কাজ শুরুর পর রাসায়নিকের এক ড্রামের বিস্ফোরণ ঘটে। তাতেই চারজন দগ্ধ হন।
চিকিৎসায় সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসক এলেন : জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের উন্নত চিকিৎসায় সহায়তা দিতে সিঙ্গাপুর থেকে একজন চিকিৎসক এসেছেন। মঙ্গলবার মধ্য রাতে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানান হয়।
সেখানে বলা হয়, সিঙ্গাপুর থেকে আসা ডা. চং সি জ্যাক শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বার্ন ইনস্টিটিউটে পৌঁছান। তিনি হাসপাতালের পরিচালক এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং আহতদের সর্বশেষ অবস্থার খোঁজখবর নেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ আজাদ আনোয়ার এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকের আগে হাসপাতালের পরিচালককে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে উপস্থিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমানের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ডা. চং সি জ্যাক। গত জুলাই মাসে মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনার পর দগ্ধদের চিকিৎসা দিতে আসা সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক দলেও ছিলেন তিনি।