খুলনা ব্যুরো ও ফুলতলা উপজেলা সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য জামায়াতে ইসলামীর বিকল্প নেই। জামায়াত সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্তরে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে চায়। জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়ে দেশে শান্তি-শৃংখলা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করুন। গত রোববার সন্ধ্যায় খুলনা জেলার ফুলতলা স্বাধীনতা চত্বরে ফুলতলা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ উপলক্ষে সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান- ২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফুলতলা উপজেলা আমীর অধ্যাপক আ. আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, সেক্রেটারি ম্ন্সুী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, প্রিন্সিপাল গাওসুল আযম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাষ্টার শেখ সিরাজুল ইসলাম, যুব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ। উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল হাসান খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা শেখ ওবায়দুল্লাহ, কর্মপরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুব বিভাগের সভাপতি শেখ মো. আলাউদ্দিন, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ড. আজিজুল হক, উপজেলা পেশাজীবী বিভাগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম জমাদ্দার, দামোদর ইউনিয়ন আমীর ইঞ্জিনিয়ার শাব্বির আহমদ, ফুলতলা ইউনিয়ন আমীর মাষ্টার মফিজুল ইসলাম, জামিরা ইউনিয়ন আমীর মো. শরিফুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুর রহিম খান, সেক্রেটারি মো. মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় ব্যবসায়ী, শিক্ষক, অমুসলিমসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যক্তিবর্গ সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে তিনটায় খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে থানা আমীর ডা. সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটোর সভাপতিত্বে খানজাহান আলী কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। সমাবেশে তিনি বলেন, রাসুল (সা.) এর যুগে আম্মাজান আয়েশা (রা.)সহ অনেক মহিলা সাহাবী ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। হযরত সুমাইয়া (রা.) শাহাদাৎ বরণ করেছেন। সুতরাং আপনারাও নামায রোযার পাশাপাশি একটি শান্তি ও কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি পাড়া মহল্লার প্রতিটি ঘরে ঘরে জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াত পৌছে দিবেন। এখন আর ঢাল তলোয়ার সড়কির যুদ্ধ নাই এখন হলো ব্যালোটের যুদ্ধ। জাতীয় সংসদে যদি আল্লাহ ভীরু সৎ, যোগ্য ও দক্ষ লোক পাঠানো যায় তাহলে দেশের মানুষের মধ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে। তাই আগামী নির্বাচনে প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে জামায়াত মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দানের মাধ্যমে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে।
খানজাহান আলী থানা জামায়াতের সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদ মামুনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ আমিনুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেত্রী কামরুন্নাহার সালমা, জেলা জামায়াতের মহিলা সেক্রেটারি আনজুম নাহার আঞ্জু, সহকারী সেক্রেটারি ফয়জুন্নাহার পাঠান, খানজাহান আলী থানা সেক্রেটারি সাহেরা বেগম, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির, খানজাহান আলী থানা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. আল ইমরান, ছাত্রশিবির থানা সেক্রেটারি সৈয়দ তারিক হাসান, আবুল কালাম মহিউদ্দিন, মুরসালীন গাজী প্রমুখ।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজারের অধিক আমাদের সোনার ছেলেদের গুলী করে হত্যা করা, আয়না ঘরে গুম ক্রসফায়ারসহ সমস্ত হত্যাকা-ের মাষ্টারমাইন্ড ছিল শেখ হাসিনা। একথা দেশ এবং সারা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত। ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থানে গণহত্যার শিকার হয়েছে বহু মানুষ এবং আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা।
তিনি বলেন, তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান জামায়াত নেতাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনা এত নিষ্ঠুর এবং ফ্যাসিষ্ট যে, তার ক্ষেত্রে শুধু ফ্যাসিস্ট শব্দটি প্রযোজ্য নয়। বরং তিনি একজন ‘স্যাডিষ্ট’। ইংরেজিতে তাকেই ‘স্যাডিষ্ট’ বলা হয়, যার পাষাণ হৃদয় খুন, গুম, নিষ্ঠুরতা এবং রক্তপাত দেখে একটুও কাঁপে না, বরং এটা উপভোগ করে।
তিনি বলেন, আজকে বিভিন্ন মহল থেকে জালিম শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার জন্য দেশে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। তাদের এ ষড়যন্ত্র দেশবাসী যে কোনো মূল্যে রুঁখে দিবে ইনশাআল্লাহ। হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট দেশবাসীর অনেক প্রত্যাশা। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই অর্থবহ নির্বাচন দিতে হবে। দল-মত-নির্বিশেষে পুরো জাতিকে এক হতে হবে। সাম্প্রদায়িক হানাহানি, বিশৃঙ্খলা দূর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে আছি আমরা।”
বিশেষ অতিথি মাওলানা এমরান হুসাইন বলেন, “সর্বস্তরে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। জনগণের সেবায় জনগণের দোড়গোরায় পৌঁছে যেতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আমাদের যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে হবে। পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সেই পরিবর্তনের জন্য আমাদের যেমন মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে, তেমনিভাবে মাঠে ভূমিকা রাখার জন্য এগিয়ে যেতে হবে। জাতির কল্যাণে আমরা যেন যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারি আল্লাহ যেন আমাদের সেই তৌফিক দান করেন।