সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কোকিলমনি টহল ফাঁড়ির আওতাধীন হোন্দল এলাকার গভীর বনে হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যে ফাঁদ পেতে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় সাতজন ব্যক্তিকে বন বিভাগ আটক করেছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) গভীর রাতে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে তাদের আটক করা হয়। আটকরা মানুষের নজর এড়াতে ও সন্দেহ কমানোর উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহৃত ট্রলারে বন বিভাগের পতাকা লাগিয়ে রেখেছিল।
আটক ব্যক্তিরা হলেন – মনোজ পাল, মজিবুর রহমান, আলী হোসেন, মুসাক আলী মোল্লা, মোজাম্মেল শেখ, খান তামিম ও মল্লিক অহিদ। তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় এবং বাকি ছয়জন রামপাল উপজেলায় বলে জানা গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধারণা পাওয়া যায়, তারা দুবলার চরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবের সময় সুযোগ বুঝে শিকার কার্যক্রম চালাতে চেয়েছিল।
সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, অভিযানে ১০০টি হরিণ শিকারের হাঁটা ফাঁদ, দুটি ট্রলার, বন বিভাগের পতাকা একটি, ২০ মিটার সুইজাল, করাত একটি, ২০টি কন্টেইনার, হরিণের মাংস রান্নার জন্য আনা চারটি ডেসকি, দুটি ককসেট, তিনটি তেরপাল এবং দুটি ড্রাম জব্দ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং রোববার দুপুরে বাগেরহাট আদালতের নির্দেশে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও বনজ সম্পদ রক্ষায় এসব অভিযানের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। তিনি মন্তব্য করেন, অননুমোদিত প্রবেশ, বেআইনি শিকার ও ফাঁদ পাতা শুধু আইন লঙ্ঘনই নয়, পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্যও বড় ধরনের হুমকি। তাই নিয়মিত টহল, নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে, যাতে সুন্দরবন অঞ্চলের বন্যপ্রাণ ও প্রাকৃতিক সম্পদ নিরাপদ থাকে এবং শিকারি চক্রকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।