বৃষ্টিহীন এই আষাঢ় মাসে সিলেটে ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ট। গতকাল সোমবার একটু তাপমাত্রা কম থাকলেও রোববারে তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারণে অতিষ্ট গোটা নগরীসহ সিলেটবাসী। বিদ্যুতের প্রি-পেইড গ্রাহকদের নতুন ভোগান্তি। এ নিয়ে গতকাল বিক্ষোভে ফেটে পড়ে নগরবাসী। গত রোববার রাত থেকে শাহজালাল উপশহর এলাকা সহ সিলেট নগরের প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারী কয়েক হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তারা মিটার রিচার্জে ব্যর্থ হয়ে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে গিয়েও কোনো সমাধান পাননি। সেখানে কোনো কর্মকর্তাকে না পেয়ে উত্তেজিত জনতা হইহুল্লোড় শুরু করলে চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আর পিডিবির এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন আজকের (সোমবারের) মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। জানা যায়, সফটওয়ার-সার্ভার আপডেট হওয়ায় বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটারের শুরুর দিকের (১৪ সিরিয়াল) মিটারগুলো পরিবর্তনের জন্য অনেক দিন ধরে কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের তাগাদা দিচ্ছিলেন। কিন্তু নানা কারণে তারা তা করেন নি। এ অবস্থায় অনেক গ্রাহক নতুন ইউনিট ক্রয় করতে গেলে ব্যর্থ হন। দেখা দেয় বিভিন্ন কারিগরি জটিলতা। তারই ধারাবাহিকতায় গত রোববার রাত থেকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর আওতায় নগরীর উপশহর ও আশাপাশ এলাকার কয়েক হাজার প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকরা (১৪ সিরিয়াল) চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েন। ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় তারা।

সমাধানের জন্য গতকাল সোমবার সকালে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর প্রকৌশলীর উপশহরস্থ কার্যালয়ে জড়ো হন হাজারখানেক বিক্ষুব্ধ গ্রাহক। সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের কেউ সঠিক কোনো কারণ জানাতে পারেন নি। তারা বিভ্রান্তিমূলক কথা বার্তা বলেন। কেউ বলেন সফটওয়ার নষ্ট হয়ে গেছে, কেউ বলেন সার্ভারে সমস্যা। কেউ বলেন, নতুন মিটার নিতে হবে- ইত্যাদি ইত্যাদি।

বিক্ষুব্ধ গ্রাহকের সংখ্যা বাড়তে থাকলে একপর্যায়ে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অফিসের সব কর্মকর্তা সুকৌশলে অফিস থেকে সটকে পড়েন। বিক্ষুব্ধ জনতা বলেন, সঠিক জবাব দেওয়ার মতো কোনো লোকজনও নেই অফিসে। সবাই পালিয়েছে। আমরা কিভাবে ফরম জমা দিবো, কোথায় কি করবো? কোনো পরামর্শও দেওয়ার কেউ নেই। আমরা ভ্যাট দিচ্ছি, ট্যাক্স দিচ্ছি। বিদ্যুতের বিল দিয়েও কেন আমরা এই অসহ্য যন্ত্রণায় পড়বো? আমরা এ সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই।