সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা : বেলকুচি উপজেলার সোহাগপুর পৌরহাট ও বাজারে দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
হাটে উপজেলার কৃষক ও গৃহস্থরা উৎপাদিত খাদ্যশষ্যসহ বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করতে গিয়ে সরকার নির্ধারিত টোল মূল্যের চেয়ে প্রায় চারগুণ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন। অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলেও হাসিলে আদায়কৃত টাকার অংক না বসিয়ে পশুর বিক্রির মূল্য অংক বসিয়ে জনসাধারণের চোখ ফাঁকি দিচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাটের ক্রেতা-বিক্রেতারাসহ সাধারণ জনগণ।
হাটের দিন সরেজমিনে দেখা যায়, নিয়ম থকলেও হাটের কোথাও টোল চার্ট টাঙানো নেই। হাটের মূল ইজারাদার প্রতিটি মালের বাজার পৃথকভাবে সাবলিজ প্রদান করেছেন। সাবলিজ গ্রহীতারা পৃথক মালামাল বাজারে টোল আদায়ের জন্য বিভিন্ন লোক নিয়োগ দিয়েছেন। তারা সরকারি নীতিমালা বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে নিজেদের মনগড়া হারে টোল আদায় করে চলেছেন। উক্ত হাটের দোকান প্রতি ৭০-১০০ টাকা, 'গরু, মহিষ, ঘোড়া প্রতিটি সর্বোচ্চ ৪০০ টাকার বেশি নয়' আদায়ের চুক্তি থাকলেও গরু মহিষ প্রতি নেয়া হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। 'ছাগল, ভেড়া প্রতিটি ৬০ টাকার বেশি নয়' আদায়ের কথা থকলেও নেয়া হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রির দোকান প্রতি ৭০ থেকে ১০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। হাটে বসে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের যে পণ্য (ভ্রাম্যমাণ) বিক্রি করে তার প্রতি আইটেম থেকে নির্ধারিত টাকার চাইতে বেশি টোল আদায় করা হচ্ছে।
সোহাগপুর হাট থেকে ছাগলের বাচ্চা কিনে বাড়ি ফেরাকালে কথা হয় জাহাঙ্গীর আলমের সাথে। ছগলের বাচ্চা কিনে হাসিল দিয়েছেন কত টাকা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন ১০০ টাকা দিয়েছি। হাসিলের রসিদ দেখতে চাইলে তার হাতের তালু মেলে ধরেন এ প্রতিবেদকের সামনে। দেখা যায় হাতের তালুতে সিল মারা। অর্থাৎ ছাগল বিক্রির হাসিল রসিদ না দিয়ে অভিনব কায়দায় ক্রেতার হাতের তালুতে সিল মেরে দিয়েছেন।
নির্ধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত টোল আদায়ের ব্যপারে হাট ইজারাদার খোদা বক্স প্রামাণিক কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
বেলকুচি পৌরসভা কর্তৃক নিযুক্ত হাট বাজার পরিদর্শক বিউটি খাতুন ও আদায়কারী রফিকুল ইসলামকে অতিরিক্ত টোল আাদায় করা বিষয়ে তাদের দায়িত্ব পালন সম্পর্কে এ প্রতিবেদকের সামনেই খোদ বেলকুচির' ইউএনও'র জিজ্ঞাসাবাদে সদুত্তর দিতে পারেনি তারা।
হাসিলের রসিদ না দিয়ে মানুষের হাতের তালুতে সিল মারা বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া সুলতানা কেয়া বলেন, আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। এটি মানবিক অমর্যাদাকর একটি বিষয়। অতিরিক্ত টোল আদায়সহ সব বিষয়ে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।