পবিত্র মাহে রমযান আত্মশুদ্ধির মাস; গুনাহ মাফের মাস; তাই এ মাসের প্রকৃত শিক্ষা বাস্তবজীবনে প্রতিফলন ঘটিয়ে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাতে সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন।
গতকাল বুধবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর ফার্ম গেইটের হোটেল শুকতারায় শেরেবাংলা নগর দক্ষিণ থানা জামায়াত আয়োজিত এক ইফতার মাহলিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। থানা আমীর আবু সাঈদ মন্ডলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি তারিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক ও প্রচার এবং মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার। আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ব্যাংকার মাহবুবুল আলম, কলেজ শিক্ষক পরিষদের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক আ জ ম কামাল উদ্দীন, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য আমিনুল ইসলাম, শেরেবাংলা নগর উত্তর থানা আমীর আব্দুল আউয়াল আজম, সফিকুর রহমান পাটোয়ারী, জামায়াত নেতা সোহেল খান, জামিল বিন হোসাইন ও যাওয়াদ প্রমুখ।
সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, আজ আমরা যখন ইফতার করার জন্য ইফতারীর রকমারী পসরা নিয়ে বসেছি, তখন আমাদের গাজার মজলুম ভাইয়েরা জায়নবাদীর নির্মমতার শিকার হচ্ছেন। দখলদার বাহনী সেখানে প্রতিনিয়ত গণহত্যা চালাচ্ছে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে সেখানে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ আহত করে পুরো গাজা নগরীকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ব বিবেক তাদের জন্য জাগ্রত হচ্ছে না বরং তারা নিরব দর্শমের ভূমিকা পালন করছে। মুসলিম বিশ্ব তাদের জন্য কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছে না। তাই গাজার মুসলমানদের রক্ষায় বিশ্ব মুসিলমকে এক প্লাট ফর্মে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি অবিলম্বে গাজায় হত্যা ও নিধনযজ্ঞ বন্ধে মুসলিম বিশ্ব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।
তিনি বলেন, ফ্যাসীবাদী আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের কাছে দেশকে বিক্রি করে দিয়েছে। ভারতের পরিকল্পনায় দেশের ৫৭ জন চৌকস, মেধাবী ও দেশপ্রেমী সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বকে অনিরাপদ ও অরক্ষিত করা হয়েছে। তারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য ব্যাপকভাবে গণহত্যা চালিয়েছে। যা জাতির সংঘের তদন্ত রিপোর্টে ওঠে এসেছে। যা গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এতে আওয়ামী সরকার কর্তৃক মানবতাবিরোধী অপরাধ ও ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ মিলেছে। তাই এসব গণহত্যাকারী অবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। অন্যথায় জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে না।
তিনি বলেন, ফ্যাসীবাদের পতন হলেও তাদের প্রতিভূরা এখনো সক্রিয় রয়েছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মূলত, আওয়ামী ফ্যাসীবাদীরা পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকেই বিকল করে দিয়েছে। বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সহ সকল কিছুকেই দলীয়করণ করা হয়েছে। তাই নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন কোন ভাবেই ফলপ্রসূ হবে না বরং ফ্যাসীবাদ নতুন করে ফিরে আসার মওকা খুঁজবে। কোন গালগল্প বা কিচ্ছা-কাহিনীর মাধ্যমে জাতির এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। তাই দেশ ও জাতির ক্রান্তিকাল মোকাবেলায় সকলকে উদ্যোগী ও উদ্দমী হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।