এফ,এ আলমগীর, চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা: ঘুষের টাকা গুণে গুণে বুঝে নিচ্ছেন চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্যাশিয়ার উজ্জ্বল বড়ুয়া। অফিসের পুরাতন ভবনের তার নিজ টেবিলে বসে ঘুষের টাকা গ্রহন করার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

ভিডিওতে শোনা যায়- যিনি টাকাগুলো দিচ্ছেন, তিনি বলছেন-এক্সেন স্যার বলছে আমার নাম করে যদি কেউ এক টাকাও চাই, দেবেন না। তখন ক্যাশিয়ার উজ্জ্বল বড়–য়া তাদের উত্তরে বলছেন, আবার গিয়ে বলেন দাদা এই কথা বলছে, দেখবেন তখন না বলবে না। এরপর একজন কিছু টাকা বের করে উজ্জল বড়–য়ার হাতে দেন এবং বলেন, টাকা তো সব আপনাদের অফিসেই দিয়ে দিলাম। আমাদের কিছু আছে? এ সময় উজ্জ্বল বড়–য়াকে ওই টাকা গুণে নিতে দেখা যায়। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন করেছিলেন কক্সবাজারের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান।

প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে করা লিখিত ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়, উজ্জল বড়–য়া জনস্বাস্থ্যে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ স¤পাদক ও বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের কক্সবাজার জেলার সাধারণ স¤পাদক ছিলেন উজ্জ্বল বড়–য়া। এসব পদের বলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ব্যবহার করেই অনিয়ম-দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন তিনি।

লিখিত ওই আবেদনে আরও বলা হয়, কক্সবাজার জেলায় কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের ইট, বালি ও সিমেন্ট সাপ্লাইয়ার হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। অঘোষিতভাবে নিজের লোক দিয়ে বাগিয়ে নিতেন ঠিকাদারী প্রকল্প। একইসঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহৃত মালামাল ল্যাবরেটরি টেস্টে পাঠালে সরকারি হিসেবের চাইতে অধিক টাকা দাবি করতেন উজ্জল বড়–য়া। এভাবে ঠিকাদারদের জিম্মি করে বিপুল টাকা আয় করেছেন তিনি। তার পদোন্নতিতে সুপারিশ করেছিলেন নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দিন। বিপ্লব বড়–য়া ও হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি অফিস সহকারী থেকে ক্যাশিয়ার পদ বাগিয়ে নেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে অভিযুক্ত উজ্জ্বল বড়–য়া বলেন, ভিডিওতে যাদের দেখা যাচ্ছে তাদের কোনো অভিযোগ আছে? এ বিষয়ে মন্তব্য করতে আমি ইচ্ছুক নয়। মিডিয়ায় কথা বলতে নিষেধ আছে আমাদের।

এসব বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মিডিয়ায় বক্তব্য দিতে হলে আমাদের অনুমতি নিতে হবে। এভাবে কথা বলতে পারবো না।