জুলাই অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদ- পাওয়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিন খানের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।

এদিন দুদক কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের করা আবেদনে বলা হয়, লুৎফুল তাহমিনা খান ১৫ কোটি ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার ৫৯১ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে লুৎফুল তাহমিন খানকে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করে নিজের এবং তার আংশিক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে ১০টি ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়বর্হিভূত ৪৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭৪৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেন। এই অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২, এর ৪ (২) ও ৪(৩) ধারায় শান্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন তারা। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার সকল আয়কর রিটার্নসহ সংযুক্ত রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করছে দুদক।

গত বছরের ৫ অগাস্ট ছাত্র-গণআন্দোলনের আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং সেখানেই আছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালও ভারতে পালিয়ে আছেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গেল ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনার সঙ্গে কামালকেও প্রাণদ- দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধে ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাদের দুজনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

গেল বছর ৯ অক্টোবর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিন, ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান জ্যোতি, মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খান ও সাবেক এপিএস মনির হোসেনের বিরুদ্ধে ৪৪৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলাদা পাঁচটি মামলা করেছে দুদক। তার আগে ১৪ সেপ্টেম্বর জ্যোতিকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেয় পুলিশ।