সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ দেখাশোনার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আরামিট গ্রুপের দুই কর্মকর্তা উৎপল পাল ও মো. আবদুল আজিজ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, জাবেদ ও তার স্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে তারা বিদেশে অর্থ পাচার এবং দেশে-বিদেশে থাকা অবৈধ সম্পদ দেখাশোনা করতেন।
গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদের আদালতে এ জবানবন্দি দেন দুই আসামি।
আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেডের এজিএম (সহকারী মহাব্যবস্থাপক) আবদুল আজিজ এবং আরামিট গ্রুপের এজিএম (ফিন্যান্স) উৎপল পাল, দু’জনেই সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাবেদের পারিবারিক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
দুদকের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মোকাররম হোসাইন জানান, ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের মামলায় রিমান্ডে থাকা এই দুই কর্মকর্তা আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন। তারা শুধু আরামিট গ্রুপের কর্মকর্তা নন, জাবেদ এবং তার স্ত্রীর ব্যক্তিগত হিসাব-নিকাশও দেখাশোনা করতেন।
গত ২৪ জুলাই ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচারের অভিযোগে জাবেদ ও তার স্ত্রী রুকমিলাসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তদন্তে বেরিয়ে আসে, জাবেদ তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীকে নামসর্বস্ব কোম্পানির মালিক সাজিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন। পরে সেই টাকা কয়েকটি ভুয়া অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে বিদেশে পাচার করা হয়। এই মামলার সূত্র ধরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে দুদকের একটি দল আরামিট গ্রুপের দুই এজিএম আবদুল আজিজ ও উৎপল পালকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে উৎপল পাল বিদেশের সম্পদ অর্জন ও দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি দেশ থেকে দুবাই এবং সেখান থেকে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে জাবেদের পরিবারের অর্থ পাচারের মূল হোতা ছিলেন। অন্যদিকে, আবদুল আজিজ জাবেদের অবৈধ সম্পদ কেনা-বেচা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতেন।