আবদুল হাই ইদ্রিছী, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) : ব্রিটিশ আমলে আসাম ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে ১৮৯৮ সালে কুলাউড়া এবং আখাউড়া হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। প্রায় ১২০ বছর আগের তৈরি রেলপথ এখন জরাজীর্ণ হয়ে উঠছে। সিলেট-আখাউড়া রেলপথের শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়া অংশে দেশবিদেশের অনেক পর্যটক আসেন। যাতায়াত ব্যবস্থায় পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই ট্রেন রয়েছে। তবে দিনদিন যাতায়াতের এই মাধ্যমটি সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কুলাউড়া থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত অন্তত আট থেকে দশটি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এছাড়া রেললাইন থেকে নাট, বল্টু ও ক্লিপ চুরি হচ্ছে। টুকটাক লাইন মেরামত করা হলেও নতুন রেললাইন বা বড় ধরনের মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা। ফলে এই অঞ্চলে আগত পর্যটকেরা যাতায়াত ব্যবস্থায় একটু ভোগান্তি পোহাতে হয়।

এই রেলপথের নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, সিলেট থেকে শায়েস্তাগঞ্জ পর্যন্ত রেল লইন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই পথে যখন রেল চলাচল করে তখন অনেক জায়গায় ধীরগতিতে চলতে হয়। আবার কোথাও দাঁড়িয়ে থাকে। লাউয়াছড়া বনে প্রায় সময় ট্রেন থেমে থাকে। এছাড়া রেললাইনে নাট, বল্টু ও ক্লিপ না থাকায় রেললাইন বেঁকে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। পর্যটন সমৃদ্ধ মৌলভীবাজার জেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সবসময় পর্যটক আসেন। রেলপথের ত্রুটির কারণে অনেক সময় ট্রেনের নিরাপদ যাত্রা বিলম্বিত হয়ে উঠে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট-আখাউড়া রেলপথের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থেকে কুলাউড়া পর্যন্ত অন্তত পক্ষে ৮ থেকে ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু রয়েছে। এ জেলায় পর্যটকেরা বিশেষ করে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, শ্রীমঙ্গলের চা-বাগান, চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, বড়লেখার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে আগত পর্যটকেরা রেলপথে বেশি আসা যাওয়া করেন।

রেলওয়ের কুলাউড়া জংশনে দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা যতটুকু সম্ভব রেললাইন নিরাপদ রাখার চেষ্টা করি। মাঝে মধ্যে নাট-বল্ট, ক্লিপ চুরি হয়। এগুলো সাথে সাথে আবার লাগানো হয়। কিছু জায়গায় সুতা দিয়ে বাঁধা হয় ট্রেন চলাচলের সময় যেনো এগুলো উড়ে না যায়।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল্লাহ বলেন, আমরা সেতুগুলো মেরামতের করছি। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সেতুতে কাজ হবে। রেলের এই সমস্যাগুলো দীর্ঘদিনের। আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় লাইনে কাজ করা হয় যাতে কোনো সমস্যা না হয়। রেলপথে হুক, ক্লিপসহ লাইন মেরামত নিয়মিত করে থাকি। লাউয়াছড়া বনাঞ্চলে কুয়াশার কারণে টিলায় উটতে একটু সমস্যা হয়।