প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের জুলাই ঘোষণাপত্রে গণমানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর ও পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘোষণাপত্রে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের কথা বলা হলেও ১৯৪৭ এর আজাদীকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে পিলখানা হত্যাকান্ড শাপলা হত্যাকান্ড ২৮ অক্টোবরের হত্যাকান্ডের উল্লেখ নেই।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্মপরিষদ বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, অনতিবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্রে জনআকাক্সক্ষার অপরিহার্য বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের অতীতের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে অবিলম্বে জুলাই সনদ বর্তমান সরকারকেই তা বাস্তবায়ন করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংস্কার এবং হত্যাকান্ডের বিচার নিশ্চিত করে জুলাই সনদের ভিত্তিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

মহানগরী ভারপ্রাপ্ত আমির নজরুল ইসলাম বলেন, শহীদ আবু সাঈদের রক্তদানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন যাত্রা শুরু হয়। তাঁর শাহাদাত ছিল নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জ্বলন্ত চিহ্ন, যা হাজারো মানুষকে সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছিল। ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রাম নতুন গতি পায় তাঁর আত্মত্যাগের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, শহিদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর শাহাদাত ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনায় তাঁকে হত্যা করে ফ্যাসিস্ট সরকার জনমত দমন করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁর রক্ত বৃথা যায়নি। জনগণের হৃদয়ে সাঈদী ছিলেন ঈমান, সাহস ও ন্যায়ের প্রতীক। তাঁর শাহাদাত গোটা জাতিকে জাগিয়ে তোলে, জন্ম দেয় গণআন্দোলনের এবং মাত্র এক বছরের ব্যবধানে পতন ঘটে সেই স্বৈরাচারী সরকারের, বাধ্য হয় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে।

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দকে পরিকল্পিতভাবে বিচারিক হত্যার মাধ্যমে শহীদ করা হয়েছে। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার উপেক্ষা করে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে তাদের ফাঁসির দন্ড কার্যকর করা হয়, যা ছিল প্রকৃতপক্ষে জুডিশিয়াল কিলিং। আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন ওঠা সত্ত্বেও ফ্যাসিস্ট সরকার প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব থেকে একে একে শহিদ মতিউর রহমান নিজামী, শহিদ আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, শহিদ আবদুল কাদের মোল্লা, শহিদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ শীর্ষ নেতাদের প্রাণহানি ঘটায়। এই বিচার ছিল পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম ২ আসনের সংসদ সদস্য প্রদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মুহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর ও চট্টগ্রাম ১০ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, কর্মপরিষদ সদস্য ডা. মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, কর্মপরিষদ সদস্য হামেদ হাসান ইলাহী, অধ্যাপক সাইফুল্লাহ, মাওলানা মমতাজুর রহমান, অধ্যক্ষ মাওলানা জাকের হোসেন, ফখরে জাহান সিরাজী সবুজ, মাহমুদুল আলম, প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।