বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ বর্তমানে এক নতুন মোহনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের দেশের ভবিষ্যৎ জামায়াতে ইসলামীর হাতে তুলে দিতে চায়, কারণ তারা বিশ্বাস করেন জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এদেশের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হবে। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে যে নৈতিক অবক্ষয় ও রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে, তা কাটিয়ে উঠতে সৎ, আদর্শবান ও যোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। দুর্নীতি ও বৈষম্য থেকে মুক্ত একটি সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের জন্য এমন নেতৃত্ব অপরিহার্য। আর ইসলামী মূল্যবোধ ও আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত নেতৃত্বই এই দেশের মানুষের প্রকৃত মুক্তি নিশ্চিত করতে সক্ষম।
গতকাল সোমবার জামালখান এক কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৯ সংসদীয় (বাকলিয়া- কোতোয়ালি) আসনে দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা শাহজাহান বলেন, বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত লক্ষ্য করলে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, দেশের জনগণ এদেশকে আমানত হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর হাতে তুলে দিতে প্রস্তুত। তিনি দলীয় দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিজয় নিশ্চিত করতে হলে কঠোর পরিশ্রম ও রাজনৈতিক কৌশল অনুসরণ করে কাজ করতে হবে। তখনই বিজয় আসবে। আর বিজয় আসলে এই বাংলাদেশ আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ইসলামী নেতৃত্ব মানেই হলো দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়বিচার ও মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি আদর্শ রাষ্ট্র রেখে যেতে হলে এখনই আমাদের সচেতন হতে হবে। তিনি জামায়াতে ইসলামীর হাতকে শক্তিশালী করতে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেন, সংগঠনের দাওয়াতকে গণমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। দেশের মানুষ ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর বার্তা মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছে। গণসংযোগে আমরা যেখানেই যাচ্ছি, মানুষ জামায়াতে ইসলামীর শাসন দেখতে চায়। তারা উন্মুখ হয়ে রয়েছে একটি সুশাসিত, ন্যায়ের সমাজ ব্যবস্থার জন্য। তবে জামায়াতে ইসলামী শাসক হতে নয়, দেশের সেবক হতে চায়।
চট্টগ্রাম-৯ সংসদীয় আসনের প্রার্থী ডা. এ. কে. এম ফজলুল হক বলেন, দেশের জনগণ এমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছে, যারা কেবল দক্ষ বা শিক্ষিতই নন, বরং চরিত্রবান, আদর্শবান এবং ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী। তাই জনগণকে সচেতন হয়ে এমন নেতৃত্ব বেছে নিতে হবে, যারা স্বচ্ছ, জবাবদিহিতার প্রতি দায়বদ্ধ এবং সর্বোপরি জনগণের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ। তিনি বলেন, একমাত্র ন্যায়পরায়ণ নেতৃত্বই পারে এই জাতিকে সত্যিকার উন্নয়ন ও ইনসাফের পথে এগিয়ে নিতে।
চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম- ৯ সংসদীয় আসনের নির্বাচন পরিচালক ফয়সল মুহাম্মদ ইউনূস এর সভাপতিত্বে ও ৯ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব তৌহিদ আজাদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ছাত্রশিবিরের সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল, কোতোয়ালি থানা জামায়াতের আমীর আমির হোছাইন, ডবলমুরিং থানা আমীর ফারুকে আজম, চকবাজার থানা আমীর আহমদ খালেদুল আনোয়ার, বাকলিয়া থানা আমীর সুলতান আহমদ, ডা. এটিএম রেজাউল করিম, নগর দক্ষিণের ছাত্রশিবিরের বায়তুলমাল সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।
আকবরশাহ থানা জামায়াতের সহযোগী সদস্য সম্মেলন : ২৭ এপ্রিল রাত ৮টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আকবরশাহ থানা কর্তৃক আয়োজিত এক সহযোগী সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমীর ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী।
আকবরশাহ থানা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আবদুল হান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য, চট্টগ্রাম সীতাকু--৪ আসনের জামায়াত ঘোষিত এমপি প্রার্থী আনোয়ার ছিদ্দিক চৌধুরী, আল আমীন হাসপাতালের এম ডি ইউসুফ চৌধুরী, শ্রমিক নেতা মোঃ আলতাফ হোসেন ও ছাত্র নেতা সাইদুর রহমান। সম্মেলন সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন থানা সেক্রেটারি মাওলানা রেজাউল করিম এবং থানা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কাজী আফসার উদ্দিন শাহীন প্রমুখ।