যশোর সংবাদদাতা : সংস্কার না হয়ে নির্বাচন হলে বিগত সরকারের মতো চোর ডাকাতরা নির্বাচিত হবে। তাই আগে দেশের রাজনৈতিক ও শিক্ষাব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

গত শনিবার দুপুরে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জেলা শিক্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, এখন থেকেই বহু লোক ডাকাতি চুরি করার পাঁয়তরা শুরু করেছে। তারা নির্বাচিত হলে বিগত সরকারে যেমন চুরি ডাকাতি হয়েছে, আবারও সেই অবস্থার সৃষ্টি হবে। তাই আগে সংস্কার, তার পরে নির্বাচন। কিন্তু একটি পক্ষের কথা হলো, যে করে হোক নির্বাচন হতে হবে। যদি স্বৈরাচারী শাসকের মতো আবারও সেই নির্বাচন হয় তাহলে নির্বাচনের দাম নেই বলেও প্রশ্ন তোলেন এই শিক্ষক নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য। তাই আগে সংস্কার, তার পরে নির্বাচনের দাবি জানান তিনি। এ জন্য দ্রুত সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

শিক্ষকদের উদ্দেশে নায়েবে আমীর আরো বলেন, বিগত সময়ে পাতানো নির্বাচনে অনেক শিক্ষক জড়িত। পাতানো নির্বাচনে শিক্ষকদের স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছিলো, শতকরা ৪ থেকে ৫ শতাংশ ভোট পড়লেও, লিখতে বলেছে ৪১ থেকে ৪৫ শতাংশ। অনেকেই সেই সময়ে চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়ে লিখতে হয়েছে। শাসক যদি চোর হয় সেই জমিনে যারা বসবাস করবে; তারাও চোর হবে। এসময় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান উপস্থিত শিক্ষকদের হাত উঁচু করে আগামী নির্বাচনে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার অঙ্গীকার করান।

শিক্ষক ফেডারেশন যশোর জেলার সভাপতি অধ্যাপক আবুল হাশিম রেজার সভাপতিত্বে এবং জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মনিরুজ্জামান এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্দশ শিক্ষক ফেডারেশন জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এ বি এম ফজলুল করীম, যশোর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. আলমগীর বিশ্বাস, মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সহসভাপতি শাহাজান মাদানী, মাধ্যমিক স্কুল পরিষদের সভাপতি নূর-ই-আলী নুর মামুন এবং কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি রবিউল ইসলাম, মদনপুর সম্মিলনী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ড. শফিকুল ইসলাম, আল হেরা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের যশোর জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, বিগত সরকার ইসলামপন্থী শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করেছে, জুলুম চালিয়েছে। এখনও অনেকে চাকরিতে ফিরে যেতে পারেননি। তাদের দ্রুত পুনর্বহাল করতে হবে। শিক্ষার নামে যদি সমকামিতাকে উৎসাহিত করা হয় বা ধর্মহীনতা প্রচার করা হয় জামায়াত তা কখনও মেনে নেবে না। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। তাই এখন একটি নৈতিক ও ইসলামী চেতনার শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা সময়ের দাবি। সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ সহ¯্রাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে ১৪ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়।