সলঙ্গা (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা : সিরাজগঞ্জের তিনটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। টিউবওয়েলে পানি উঠছে না এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পানির অভাবে গবাদিপশু পালন ও সংসারের কাজকর্মও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রায়গঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, পানির স্তর নিচে নামার কারণে হ্যান্ড টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। তবে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেও আশা করছে তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তিনটি উপজেলার মধ্যে রায়গঞ্জের সলঙ্গা থানার আমশড়া, তাড়াশ উপজেলার ঝুরঝুরি, উল্লাপাড়া উপজেলার খুদ্দর্শিমলাসহ আগরপুরের গ্রামাঞ্চল গুলোতে বিভিন্ন হ্যান্ড টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। গত মার্চ মাস থেকেই পানি ওঠা কমে যায়। আর এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে এই সমস্যা তীব্র হতে শুরু করেছে। পানির সংকটের কারণে সামর্থ্যবান অনেকেই বাড়িতে মোটর বসিয়ে নিচ্ছে।
সরেজমিনে রায়গঞ্জ উপজেলার সলঙ্গা থানার ৩নং ধুবিল ইউনিয়নের আমশড়া গ্রামে সাংবাদিক ফারুক আহমেদ এর বাড়িসহ সিরাজগঞ্জের তিনটি উপজেলার অধিকাংশ বাড়িতে গিয়ে দেখে যায়, টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। অনেকে টিউবওয়েলের সঙ্গে মোটর বসিয়েছেন। তবে সেখানেও পানির দেখা মিলছে না। গোসের সময় মাঝারি বালতিতে ১০০ থেকে ১২৫ চাপেও পানি ভরছেনা বলে আপছোছ করে কথা গুলি বলেছেন উল্লাপাড়া উপজেলার আগুরপুর গ্রামের ঘর মিস্ত্রী আমিরুল ইসলাম। পানিবাহী তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের সরাপপুর গ্রামের আদিবাসী দিপালী শীল বলেন, গত দেড় মাস ধরে পানির সমস্যা। একমাস আগে টিউবওয়েলের সঙ্গে মোটর বসিয়েছি, তাতেও পানি উঠছে না। এখন দূরের একটি মাঠের স্যালো মেশিন থেকে পানি আনতে হচ্ছে।
সলঙ্গা থানার ৩নং ধুবিল ইউনিয়নের ধুবিল গ্রামের পরিস্থিতিও একই। গ্রামটির অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। পানির সংকটের কারণে সংসারের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। আনোয়ারা বেগম বলেন, এক জগ পানি তুলতে কমপক্ষে ৫ মিনিট সময় লাগে। পানির সমস্যার কারণে দুটি গরু আর তিনটি ছাগল বিক্রি করে দিয়েছি। আশপাশের পুকুর ও খালেও পানি নেই। এমন অবস্থায় আমরা খুব কষ্টে আছি।
সলঙ্গা সদরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরেও দেখা যায় টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। অনেক টিউবওয়েল একদমই নষ্ট হয়ে গেছে। সাংবাদিক ফারুক আহমেদ বলেন, পানির বড় সমস্যা চলছে। টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। বাধ্য হয়ে জলমোটর বসাতে হয়েছে।
রায়গঞ্জ উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী এই প্রতিনিধিকে আরো বলেন, পানির স্তর বেশি নিচে নেমে যাওয়ার কারণে হ্যান্ড টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এজন্য আমরা এখন টিউবওয়েল আর সাবমার্সিবল মোটর বসানোর পরামর্শ দিচ্ছি। বৃষ্টিপাত না হলে এই সমস্যার সমাধান হবে না।