মুরাদনগ (কুমিল্লা) সংবাদদাতা : মুরাদনগর উপজেলা জুড়ে ড্রেজার। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সোনাকান্দা, সাহেদাগোপ, কামাল্লা, যাত্রাপুর ইউনিয়ন থেকে শুরু করে প্রায় সর্বত্রই চলছে ড্রেজার। ভরা বর্ষায় পানি সরবরাহের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করে চলছে কয়েকটি চক্র। দিনের পর দিন ড্রেজার চালিয়ে রাতারাতি নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করছে তারা। অভিযানে পাইপ ভাঙা বা ড্রেজার মেশিন জব্দ করা ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগণ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ওই ড্রেজার ব্যবসায়ী চক্র।

ভুক্তভোগীরা বলেন, উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলে সাথে সাথে অফিসার ঘটনাস্থলে যায় না। কয়েকদিন পর যায় এরমধ্যেই ওই জমি বালু উত্তোলন করে ফেলে। সকালে ড্রেজার তুলে নিলে বিকেলে ড্রেজার নতুন মিশিন আবার ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করে ওই সব সিন্ডিকেট। সরজমিনে ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা পল্লিবিদ্ৎু সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস যাবত একটি ড্রেজার চলছে। যাত্রাপুর ইউনিয়ন যাত্রাপুর উত্তর বিলে, উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের শাহেদাগোপ গ্রামের দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে কৃষি জমিতে, বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের দৈয়ারা বিলে, শ্রীকাইল ইউনিয়ন সোনাকান্দা দরবারে শরিফের দক্ষিণ পাশে চলছে ড্রেজিং।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুরাদনগর ২২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বিল থেকে পৃথক অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাছান খাঁন। ৩শ’ ড্রেজার মেশিন ভাঙচুর ও উত্তোলন করা হয়, ৩ লাখ ফুট পাইপ ধ্বংস এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে ভ্রাম্যমান আদালত। মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব হাছান খাঁন বলেন, গত কয়েক মাসে তিন শতাধিক উপরে ড্রেজার উত্তোলন করা হয়েছে। সাড়ে তিন লাখ ফুট পাইপ বিনষ্ট করা হয়। পঞ্চশ লাখ টাকার উপরে জরিমানা করা হয়েছে। তারপরও থেমে নেই তাদের তৎপরতা। এখন বর্ষা মৌসুম, পানিতে টইটুম্বর থাকা ফসলি মাঠের মাঝে ড্রেজার বসানোর কারণে সেখানে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তারপরও যতটুকু পারছি আমরা ধ্বংস করছি। অভিযানে ড্রেজার মেশিন ভাঙচুর করা হলেও পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে কেন আইনগণ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা যখন অভিযান যাই তখন ড্রেজারের আশপাশে কাউকে পাওয়া যায় না, এমনকি ওই ড্রেজার কে পরিচালনা করে এমন তথ্য পর্যন্ত কেউ দিতে চায় না। যে কারণে ড্রেজার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। তবে ড্রেজারের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।