বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, জুলাই বিপ্লব পূর্ব বাংলাদেশে মানুষের জানমালের কোন নিরাপত্তা ছিলো না। দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, লুটপাট, অপরাধ ও জুলুমবাজীতে গোটা দেশ ছেয়ে গিয়েছিলো। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের পর জনগণের মধ্যে যে আশাবাদের সৃষ্টি হয়েছিলো, অন্তর্বর্তী সরকার সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে দুর্নীতি ও অনিয়ম এখনো রয়ে গেছে। সরকার জনগণকে শান্তি ও নিরাপত্তা দিতে পরেনি। তাই এ অবস্থার একটি ইতিবাচক পরিবর্তন সরকার। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন দেশ ও জাতির ভাগ্য নির্ধারণী নির্বাচন। তাই কোন শ্রেণির ও পেশার মানুষকে ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই বরং সকলকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি শ্রমিক সমাজকে যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। গতকাল শুক্রবার সকালে খুলনা-৬ আসনের পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়ন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।

১ নং হরিঢালী ইউনিয়ন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো. মাকফার মোড়লের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. ফেরদৌস ইসলামের পরিচালনায় বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য এস এম আমিনুল ইসলাম, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ সভাপতি মাওলানা শেখ কামাল হোসেন, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরে খুলনা জেলা দক্ষিণের সভাপতি আবু জার গিফারী, সেক্রেটারি মো. অয়েসকুরুনী, পাইকগাছা উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা বুলবুল ইসলাম, সেক্রেটারি মো. আলতাফ হোসেন, উপজেলা কর্মপরিষদ মাওলানা আব্দুল হান্নান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উপজেলা সেক্রেটারি ডা. আসাদুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাইগাছা উপজেলা উত্তর থানার সেক্রেটারি মো. ইয়াসিন আরাফাত, সাহিত্য সম্পাদক রিফাত সরদার, হরিঢালী ইউনিয়ন আমীর আতাউর রহমান, সেক্রেটারি হুসাইন আহম্মেদ, সহকারী সেক্রেটারি মো. আসলাম বিশ্বাস, ৪ নং হরিদাসকাটি ওয়ার্ডের সভাপতি মজিবার ফকির, সেক্রেটারি ডা. হাসানুজ্জামান, বায়তুল সম্পাদক ডা. এনামুল হক, আনোয়ারুল উলুম কওমিয়া মাদরাসার মুহাতামিম মাওলানা আকবার হুসাইন প্রমুখ।

খুলনা-৬ আসনের এই এমপি প্রার্থী বলেন, আগস্ট বিপ্লব এমনিতেই হয়নি বরং এ জন্য অনেক ত্যাগ ও কুরবানীর প্রয়োজন হয়েছে। মূলত, ছাত্র, তরুণ-যুবক ও শ্রমিক সমাজের ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের কাছে স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে বিদেশে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। এ জন্য রাজপথে অনেকেই জীবন দিয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অনেকে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকুরী-বাকুরী সহ জীবন-জীবিকার অনুসঙ্গ হারিয়েছেন। ভিটে ছাড়া করা হয়েছে অনেককেই। এমনকি বিরোধী মতের লোকজনদের বাড়ী-ঘর ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে আশ্রয়হীন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবের ১৪ শ’ শহীদের তালিকা আমাদের হাতে আছে। এদের মধ্যে ৬০ শতাংশই শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। অন্যরা ৪০ শতাংশ। আবার শ্রমিকদের অধিকাংশ একেবারে প্রান্তিক শ্রেণির। মূলত, দেশ ও জাতির যেকোন ক্রান্তিকালেই শ্রমিক সমাজ সব সময় ঐতিহাসি ভূমিকা পালন করেছে। তাই দেশে ন্যায়- ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় শ্রমিকদেরকে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে হবে।