কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার জারুইতলা ইউনিয়নের বনমালিপুর এলাকায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহুল ঘোষ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মমিন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মেসার্স সামীয়া ব্রিকস নামের একটি ইটভাটা ভেঙে ফেলা হয়েছে। প্রশাসনের দাবি ইট ভাটাটি অবৈধ; এই ইট ভাটার কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আশপাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটারের মধ্যে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী কোন ইট ভাটা নির্মাণ করা যাবে না। এই ইট ভাটাটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটার এর মধ্যে। এদিকে ইট ভাটার মালিকের ও শ্রমিকদের অভিযোগ, কোনো নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ অভিযান চালিয়ে তাদের জীবিকা বিপর্যস্ত করা হয়েছে এবং ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের কর্মকর্তারা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
অভিযান চলাকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা সহকারী পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, “আমরা পূর্বেই নোটিশ পাঠিয়েছি। এই ইটভাটাটি অবৈধ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তবে ইটভাটার মালিক মোঃ জহিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। আমাদের কাছে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদনপত্র ২০২৬ সাল পর্যন্ত বৈধ ছিল। অভিযান চলাকালে আমরা সব কাগজপত্র দেখালেও তা গ্রহণ করা হয়নি। হঠাৎ করে এসে ভাটা ভেঙে দেওয়ায় আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি।”
ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরে এখানে কাজ করছি। ঈদের পর কাজ শেষ করে সংসার চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু ভাটা ভেঙে দেওয়ায় আমাদের জীবিকা সংকটে পড়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই ইট ভাটাটি ২০০৯ সাল থেকে পরিচালিত হচ্ছে। অভিযানে ইটভাটার স্থাপনা ও উৎপাদিত ইট ভেঙে ফেলা হয়। এতে ইটভাটা মালিকসহ প্রায় ৩০-৪০ জন শ্রমিক সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়েছে।
উল্লেখ্য বেশ কয়েক মাস আগে নিকলী সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুরশা গ্রামে মেসার্স আলতাব ব্রিকস ভ্রাম্যমান অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন পর পুনরায় এই ব্রিকফিলটি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চালু করা হয়।