খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা : পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও যুগ্ম-সচিব কংকন চাকমার অপসারণ দাবিতে খাগড়াছড়ির ‘ত্রিপুরা-মারমা সচেতন সমাজ’ সংবাদ সম্মেলন করেছে। গত ৭ এপ্রিল এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রিপুরা ও মারমা জনগোষ্ঠীর সাথে প্রশাসনিক ও উন্নয়ন বৈষম্যের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক রুমেল মারমা।
সচেতন মারমা সমাজের প্রতিনিধি রুমেল মারমা বলেন, বৈষম্যহীন, প্রতিনিধিত্বমূলক একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্নে আমরা পথযাত্রা করেছিলাম। কিন্তু, দু:খের বিষয়, আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হয়ে উঠেছে একটি সম্প্রদায়ের একচেটিয়া কর্তৃত্বের প্রতীক। এখানে ত্রিপুরা-মারমা জাতিগোষ্ঠীর জন্য নেই ন্যায্য অধিকার, নেই ন্যূনতম কেনো সম্মান।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি পেশ করা হয়। এক. সুপ্রদীপ চাকমাকে উপদেষ্টার পদ থেকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে। দুই. কংকন চাকমাকে যুগ্ম-সচিব পদ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। তিন. পার্বত্য তিন জেলায় প্রকল্প ও বরাদ্দ ‘ন্যায্যতা ও সংবেদনশীলতা’র ভিত্তিতে বণ্টন করতে হবে এবং চার. আঞ্চলিক পরিষদ, জেলা পরিষদ এবং টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান পদে মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, সরকার যদি এসব দাবি আমলে না নেয়, তাহলে তারা বৃহত্তর গণআন্দোলনের পথে যাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কার্বারী সূর্য কিরণ ত্রিপুরা, প্রশান্ত ত্রিপুরা, ম্রাচাই মারমা, উক্রাচিং মারমা, চিংলামং মারমা, মিনুচিং মারমা, সীমা ত্রিপুরা, তনয় ত্রিপুরা প্রমুখ।
সৌদী খেজুর চাষে সফলতা অর্জন করেছেন জাকির হোসেন
বিরামপুর( দিনাজপুর) সংবাদদাতা : মরুভূমির রুটি চাষ হচ্ছে দেশেই, বলেছেন খেজুর চাষী জাকির। দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার মধ্যপাড়া রোড স্বজন পুকুর গ্রামে আজুয়া, মরিয়ম, আম্বার, বারহি ও খনিজি জাতের খেজুর চাষে সফলতা অর্জন করেছেন জাকির হোসেন। তিনি ২০১৭ সালে ১৫ শতক জমিতে ১৯ টি খেজুর গাছের বীজ বপন করেন। বপনের ৪ বছর পর গাছে খেজুর আসতে শুরু করে। বর্তমান গাছ গুলির বয়স ৮ বছর। প্রতিটি গাছে প্রায় ১০ থেকে ১২ টি কাদি এবং প্রতিটি কাদির ওজন ১৫ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত হয়। খেজুরের বীজ থেকে চারা এবং খেজুর গাছের কলম কেটে তিনি চারা বিক্রি করেন ১ হাজার টাকা কলম বিক্রি করেন ১৫ হাজার টাকা।
খেজুর , চারা ও কলম বিক্রি করে তিনি বছরে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা উপার্জন করেন। তার নার্সারি নাম জাকির নার্সারি। প্রতিদিন তার নার্সারি থেকে খেজুরের চারা এবং কলম ক্রয়ের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন আসেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ১৯৯৯ সালে তিনি কুয়েতে গ্যারেজে চাকরিতে যোগদান করেন। সেই সুবাদে খেজুরের বাগান দেখে অভিজ্ঞতা অর্জন এবং বাগানের বিভিন্ন গাছের বিভিন্ন রকমের খেজুর খেয়ে তাঁর দেশে (বাংলাদেশ) খেজুর গাছ লাগার আগ্রহ জাগে। ২০১৭ সালে খাবারের জন্য খেজুর এনে সেই খেজুরের বীজ বপন করেন। গাছগুলি দেখাশোনা এবং পরিচর্যা করতেন তাঁর স্ত্রী। ২০২০ সালে দেশে এসে তিনি সরাসরি খেজুর গাছের পরিচর্যা শুরু করেন । খেজুরের বীজ থেকে চারা এবং গাছ থেকে কলম তৈরি করা শুরু করেন। ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ হলেও, বাংলাদেশে আরবের খেজুর চাষে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। বর্ষাকালে একটু সমস্যা হলেও গাছ বা খেজুরের উপর তেমন কোনো প্রভাব পড়ে না।
বর্তমান তার খেজুর গাছে প্রচুর পরিমাণে খেজুর ধরেছে। খেজুরের আগাম অর্ডার রয়েছে। আগামী আগস্ট/ সেপ্টেম্বর মাসে খেজুর নামানো শুরু হবে। তাঁর নার্সারিতে আরবের খেজুর গাছের খেজুর দেখে উৎসাহিত হয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন তার নার্সারি থেকে চারা এবং খেজুর গাছের কলম নিয়ে বাগান করছেন বলে তিনি জানান।
বিরামপুর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আসাদুজ্জামান জাকির হোসেনের আরবের খেজুর চাষের সফলতা দেখে তিনি বাগান করার জন্য জমি প্রস্তুত করেছেন। কয়েকদিনের মধ্যেই ১৫ টি চারা রোপন করবেন বলে জানান।