বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে তরুণ সমাজ এবং ছাত্র-জনতার তাজা রক্ত বৃথা যেতে পারে না। এই দেশের মানুষ একদিন স্বৈরাচারী শক্তির নির্মম শাসন-নিপীড়নের অবসান ঘটিয়েছে, সে দিনের সূচনা হয়েছিল গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। এই আন্দোলনই প্রমাণ করেছে যে, অন্যায়ভাবে নেতৃত্বে টিকে থাকার কোনো সুযোগ নেই।স্বৈরাচার পতনের ইতিহাস ছাত্র-জনতার তাজা রক্তের বিনিময়ে লেখা । সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক মোবারক হোসাইন তার বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার সরকার ছাত্র জনতার রক্তের কাছে পরাজিত হয়েছে। যারা অন্যায়ভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছে, শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তারা জনগণের কাছে নিজেদের পাপের দায়ভার লুকাতে পারেনি। সেই পাপের কারণেই তারা দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত বিরল, যেখানে শাসকগোষ্ঠীকে গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়তে হয়েছে।
মোবারক হোসাইন আরো বলেন,আজও যারা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বীজ বপন করছে, তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে ঢুকে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে। তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বাংলার মাটিতে অন্যায়-অবিচারের ঠাঁই নেই। যারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পায়তারা করবে, বাংলার মাটি তাদের গ্রহণ করবে না। ছাত্র-জনতার রক্তের ঋণ ভুলে গিয়ে যারা অকৃতজ্ঞতার রাজনীতি করছে, তাদের ইতিহাস ক্ষমা করবে না।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস। এই দিবসের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যশোর জেলা শাখার উদ্যোগে ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় ঈদগাহ মোড় থেকে একটি বর্ণাঢ্য গণমিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জেলা নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান এবং সঞ্চালনা করবেন জেলা অফিস সেক্রেটারি নূর-ই-আলা-নুর মামুন ।মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মনিহার চত্বরে গিয়ে শেষ করেন।
যশোর-৩ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সংগ্রামী নেতা ভিপি আব্দুল কাদের তার বক্তব্যে বলেন , ২৪শের স্বাধীনতা কোনো রাজনৈতিক দলের একক অর্জন নয়। এটি ছাত্র-জনতার ত্যাগ, তরুণ সমাজের আত্মদান। যারা নিজেদের স্বার্থে সেই রক্তের ঋণ ভুলে গিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরাবরই জনগণের পাশে থেকেছে, আমরা সেই শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, যারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন।
আন্যান্যদের মধ্যেবক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য শারসাÑ১ আসনের গণমানুশের সংগ্রামী নেতা মাওলানা আজীজুর রহমান, যশোর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর সিদ্দিকী, জেলা সহকারি সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, বিশিষ্ট আইনজীবী ও জেলা জামাতের যশোর মনিরামপুর-৫ আসনের সংগ্রাামী নেতা অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, বিশিষ্ট চিকিৎসক জেলা জামায়াতের সংগ্রামী যশোর ২ আসনের নেতা ডাক্তার মোসলেম উদ্দিন ফরিদ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জেলা সংগ্রাামী নেতা কেশবপুর-৬আসনের নেতা থানা আমির অধ্যাপক মুক্তার আলী, অধ্যাপক শামসুজ্জামান, অধ্যাপক মাওলানা আশরাফ আলী, যশোর শিবির সভাপতি আহমদ ইব্রাহিম শামীম, ছাত্রনেতা আশিকুর রহমান, ইসমাইল হোসেন প্রমুখ। কুরআন তেলাওয়াত করেন মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন ।
উল্লেখ্য,এই গণমিছিল ও সমাবেশে হাজারো জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে । আয়োজকরা জানিয়েছেন, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়; বরং এটি হবে গণতন্ত্র, ন্যায় ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক জোরালো আহ্বান। জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের প্রথম বর্ষপূর্তিতে এই সমাবেশ নতুন করে গণআন্দোলনের প্রেরণা জোগাবে বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ।