চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জায়গা আবারও দখলের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় চরপাথরঘাটা ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার সওদাগরের নেতৃত্বে এবং 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন' দক্ষিণ জেলা শাখার মুখপাত্র মাহবুবা ইলা খাদিজার সহযোগিতায় সিডিএ নির্মিত একটি দেয়াল ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কর্ণফুলীর পুরাতন ব্রিজঘাট এলাকার আনোয়ার সিটির সামনে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, সিডিএর প্রায় ১২-১৫ ফুট দীর্ঘ দেয়াল এবং কাঁটাতারের ঘেরা ভেঙে বিশাল একটি জায়গা খালি করে ফেলা হয়।

সরাসরি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। সেখানে স্পষ্টভাবে দেখা যায়, সিডিএর ঘেরা ভেঙে জায়গা পরিষ্কার করা হয়েছে।

সিডিএর দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মী মো. রাশেদ জানান, দেয়াল ভাঙার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং বাধা দিলে এক নারী—যিনি নিজেকে 'সমন্বয়ক' বলে পরিচয় দেন—তাঁর সঙ্গে তর্কে জড়ান। তিনি দাবি করেন, “আমি এই জায়গা সিডিএ থেকে লিজ নিয়েছি, তাই ভাঙছি।” পরে রাশেদ বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবা ইলা খাদিজা সাংবাদিক পরিচয় শুনে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি।

অন্যদিকে স্থাপনা ভাঙার বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার সওদাগর দাবি করেন, “সিডিএর হাসান সাহেব আমাদের দেয়াল ভাঙার অনুমতি দিয়েছেন, তাই আমরা কাজ করছি।”

তবে এই অনুমতির বিষয়টি সিডিএর পক্ষ থেকে সরাসরি অস্বীকার করা হয়েছে। সিডিএর প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, “আমরা কাউকে সিডিএর উচ্ছেদকৃত জায়গায় কিছু ভাঙতেও দিইনি, গড়তেও দিইনি। ব্রিজঘাট এলাকায় দেয়াল ভাঙার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। কেউ যদি দেয়াল ভেঙে থাকে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, “এই দেয়াল ভাঙতে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। যারা এ ধরনের কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ জানান, “এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সিডিএর সরকারি জমি রক্ষায় ভবিষ্যতে আরও চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।