ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারী ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-০১ (সদর) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী দেলাওয়ার হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশসহ সমমনা ইসলামী দলগুলো একটি প্ল্যাটফর্মে আসার জন্য চেষ্টা চলছে, এবং সে চেষ্টা অনেক দূর এগিয়েছে। এই চেষ্টা যদি সফল হয়, তাহলে আগামী সংসদ নির্বাচনে সকল ইসলামী দলগুলোর ব্যালট বাক্স হকে একটি। সেটি যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে বাংলাদেশে ইসলামের বিজয় আর বেশি দূরে নয়। তবে এর জন্য আরো বেশি ত্যাগের নজরানা পেশ করতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের মির্জা রুহুল আমিন পৌর মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ঠাকুরগাঁও-১ সদর আসনের উলামা মাশায়েখদের নিয়ে সিরাতুন্নবী (সা:) সেমিনারে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, রাসূল (সা:) এর আদর্শ যদি আমরা আমাদের জীবনে, সমাজে, রাষ্ট্রে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতাম তাহলে আজকে মুসলমানদের এ দুর্দশা হতো না। আমদের আলেম সমাজের এই দুর্দশা হতো না। বিগত ৫৪ বছরে বাংলাদেশে ইসলাম পন্থীদের ওপরে, আলেম উলামাদের ওপরে যে জুলুম নির্যাতন হয়েছে। এই জুলুম নির্যাতন থেকে কোন শ্রেণি পেশার আলেমরা রেহাই পাননি। হাজরো আলেমের উস্তাদ শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক, মুফতি ফজলুল আমীনি, আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, আল্লামা মামুনুল হক, মুফতী আমির হামজাসহ হাজার হাজার আলেম উলামাকে অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। হামলা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। যারা বাইরে ছিলেন, তাদেরকে কথা বলতে দেয়া হয়নি। তাদেরকে রাজপথে নামতে দেয়া হয়নি। এভাবেই ইসলাম বিদ্বেষী শক্তিগুলো এদেশের আলেম উলামা, ইসলামের অনুসারীদের ওপর জুলুম নির্যাতনের স্ট্রিম রোলার চালিয়ে এদেশ থেকে ইসলামকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছে। যার অংশ হিসাবে ৫ মে রাতের অন্ধকারে লাইট বন্ধ করে হাজার হেফাজত কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, এসবের মূল কারণ হচ্ছে আলেমদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি। একটি ষড়যন্ত্রকারি মহল সব সময় আলেমদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি তৈরী করে তারা ফায়দা লূটার চেষ্টা করেছে। আর আমরা মনে করেছি, আমাকে তো এখন ধরছে না। আমার ওপর তো জুলুম হচ্ছে না। সুতরাং চুপ থাকলেই আমি বেঁচে যাবো। এই নীতি অবলম্বন করার কারণে এক এক করে আমরা কেউ পার পাইনি। যদি শুরু থেকেই আমরা একতাবদ্ধ থাকতাম, সকল ইসলামী দলগুলো এক প্ল্যাটফর্মে থেকে ইসলাম বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতাম, তাহলে এতো বড় ক্ষতি করার সাহস কোন সরকার পেতো না। সুতরাং এখনো আমাদের সময় আছে, বিভাজনের পথ থেকে ফিরে এসে আলেমদেরকে একতাবদ্ধ হতে হবে। আলেমরা যদি সাহসের সাথে ভূমিকা পালন করে, আগামী সংসদ নির্বাচনে ইসলাম পন্থীদের বিজয়ী করতে যদি ভূমিকা পালন করতে পারে, তাহলে আমাদের বিজয়কে কেউ ঠেকাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
ঠাকুরগাঁও জেলা উলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা ফজলে রাব্বী মোর্তজাবীর সভাপতিত্বে ও ঠাকুরগাঁও শহর জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা শামসুজ্জামান শাহ শামীম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারি পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সাবেক ঠাকুরগাঁও জেলা আমীর অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হাকিম, বর্তমান জেলা আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধান, জেলা সেক্রেটারী মোহাম্মদ আলমগীর, সহকারি জেলা সেক্রেটারী অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন আহাম্মদ।