জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, ৫ আগষ্ট গণহত্যা করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এখন ভারতে বসেও দেশবিরোধী একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাই জনগণ শুধু আদেশ নয়, অবিলম্বে খুনি হাসিনার ফাঁসি কার্যকর দেখতে চায়। হাসিনার ফাঁসির রায় কর্তৃত্ববাদী শাসকের জন্য ভবিষ্যতে এক কঠিন সতর্কবার্তা। আগামীতে আর কেউ যেন ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে না পারে, সেজন্য জুলাই সনদকে কার্যকর করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গণভোট দিন। গণভোটে জনগণ নির্ধারণ করবে আগামী দিনে দেশ কিভাবে চালাতে চায়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের পক্ষে ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করছি।

সোমবার বিকেলে উপজেলার একটি কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আসন পরিচালক ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হকের সভাপতিত্বে আসন কমিটির সচিব ও জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এডভোকেট মোহাম্মদ নাছেরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত দায়িত্বশীল সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম অঞ্চল টীম সদস্য অধ্যক্ষ নুরুল আমীন, জেলা জামায়াতের আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, বাঁশখালী আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলাম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শহীদুল মোস্তফা, বাঁশখালী উপজেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা ইসমাঈল, পৌরসভা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহের, জেলা শুরা সদস্য মাওলানা আজিজুল ইসলাম, উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা আরিফুল্লাহ প্রমুখ জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ এক ঐতিহাসিক দিন। অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্নকারী, শত শত অপরাধের মাস্টার মাইন্ড খুনী হাসিনার ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালে। দেশের মানুষ এই দিনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছিল। আজ তা হয়েছে। ভারত বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দাবিদার। তা হয়ে থাকলে আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধী হাসিনাকে আশ্রয় না দিয়ে বাংলাদেশের আইনের কাছে সোপর্দ করুন। যেই ফাঁসির রশিতে ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষ নেতাদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। সেই রশিতেই হাসিনার ফাঁসি কার্যকর দেখতে চায় জনগণ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, ফাঁসির রায় ঘোষণা করেই আপনাদের দায়িত্ব শেষ নয়, হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করে যেতে হবে আপনাদের।

তিনি আরও বলেন, বাঁশখালীর জনগণ ইসলামপ্রিয়। আগামী নির্বাচনে সারাদেশের ন্যায় এখানেও ইসলামী শক্তি বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করবে, ইনশাআল্লাহ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাঁশখালী আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলামকে বিজয়ী করতে মাঠে ময়দানে সকলকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানাচ্ছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ নুরুল আমীন বলেন, ২০১৩ সালে আল্লামা সাঈদীর রায় পরবর্তী বাঁশখালীর জনগণ যে আন্দোলন করেছেন। আজ হাসিনার ফাঁসির রায় শুনে সবাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছে। যিনি নিরপরাধ ইসলামী স্কলারদের হত্যা করেছেন। আজ গণহত্যার দায়ে তাকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, শহীদদের রক্তের বিনিময়ে বাংলার জমিনে ইসলামের বিজয় নিশ্চিত হবে।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে জেলা আমীর বলেন, এবারের নির্বাচন ইসলাম বিজয়ের নির্বাচন। এ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয় হলে দুর্নীতিমুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত উন্নত দেশ গঠনে সহায়ক হবে। আলেম ওলামারা নেতৃত্বে আসলে ব্যবসায়ী, জনগণ ও সরকারের জন্য কল্যাণ হবে। তাই দূর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনে সৎলোকের শাসনের বিকল্প নেই। জনগণের আশা আকাংখা প্রতিফলন ঘটাতে জামায়াতে ইসলামীর বিজয় অনিবার্য। আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে এলাকার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। গরীব দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চায়। বিজয়ের লক্ষ্যে জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দাঁড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত করতে আপনাদের ঐকান্তিক সহযোগিতা কামনা করছি। আশা করি আগামী নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে ইনশাআল্লাহ।