সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের পর এবার তার স্ত্রী এমা ক্লেয়ার বার্টনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। নওফেলের স্ত্রী এমা ক্লেয়ার বার্টনের বিরুদ্ধে ৮৪ লাখ ৩৫ হাজার ১২৮ টাকা সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হচ্ছে বলে গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের জানান দ্র্নুীতি দমন কমিশন-দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নওফেলকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জন ও ’অর্থপাচারের’ পাশাপাশি গণআন্দোলনে হত্যা-নিপীড়নের অভিযোগেও তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
’অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের মামলার বিষয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নওফেল ও তার প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ৪১টি হিসাব থেকে ১১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা জমা এবং ৯৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া গেছে। দুদক বলছে, নওফেল তার আয়কর নথিতে ৫ কোটি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার ৮১০ টাকার স্থাবর সম্পদ ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। এর মধ্যে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ৬১৮ টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়নি। জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, নওফেলের স্ত্রী এমা ৮৪ লাখ টাকারও বেশি ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জন করেছেন। এ কারণে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(১) ধারা অনুযায়ী তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ দেওয়া হয়। তিনি বা তার পক্ষে কেউ তা গ্রহণ করেননি। ফলে ২৩ মার্চ আদেশসহ মূল সম্পদ বিবরণী ‘লটকিয়ে’ (বিজ্ঞপ্তি আকারে) জারি করা হয়।
আক্তার হোসেন বলেন, লটকিয়ে জারির পরও নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তিনি সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি এবং সময় বৃদ্ধির জন্য কোনো আবেদনও দেননি। ২১ কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ ২৯ এপ্রিলের মধ্যে বিবরণী না দেওয়ায় এটি দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।
ফলে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় এবং ৮৪ লাখ ৩৫ হাজার ১২৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এমার বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় মামলা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, বলেন দুদকের মহাপরিচালক।