ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামী খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান মনিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি করা হয়েছে। রোববার (১৬ মার্চ) দুপুর ২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত ভুক্তভোগী বিথী আক্তার এ দাবি করেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, নগরীর সোনাডাঙ্গা হাজী ইসমাইল লিংক রোডের সিদ্দিকীয়া মহল্লা এলাকায় স্বামী মো. মফিজুর রহমান ও দু’সন্তানকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল তার। কিন্তু স্বামীর সৎ বড় ভাই সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. হাফিজুর রহমান মনি স্ত্রী মারা যাওয়ার পর কেমন যেন হায়না হয়ে উঠে। আমার সঙ্গে খারাপ আচারন করতে থাকে এবং কুপ্রস্তাব দেয়। এ ঘটনা আমি আমার স্বামীকে জানাই। মনি যেহেতু আমার স্বামীর বড় ভাই তিনিও বিষয়টি কৌশলে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। পরে মনি বলে ‘আমি যা চাই, আজ হোক আর কাল হোক তা আমি আদায় করে ছাড়ব। আমি বাধার সৃষ্টি করলে সে রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখানোর হুমকি দেয় এমনকি আমি বাধার সৃষ্টি করলে জীবন নাশের হুমকি দেয়। এরপরও আমি তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুর ১টা থেকে দেড়টার দিকে আমি গোসল করার প্রস্তুতি নেওয়ার পূর্ব মুহুর্তে আমাকে বাড়ীতে একাকি পেয়ে আমার শয়ন কক্ষে ঘাপটি মেরে থাকা হাফিজুর রহমান মনি রাগান্বিত অবস্থায় আচমকা আমাকে ঝাপটে ধরে খাটের উপর চিৎ করে ফেলে টান মেরে পরনের কামিজ-স্যালোয়ার ও ব্রা ছিড়ে বিবস্ত্র করে মুখের মধ্যে কাপড় দিয়ে আমার শরিরের স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দেয় এবং আমার বুকের উপর উঠে ধর্ষনের চেষ্টা করে। এসময় আমি তার বুকে লাথি মেরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সে প্রচন্ড ক্ষীপ্ত হয়ে আমার নাকে, মুখে চোখে কিল, ঘুষি, লাথি, মেরে চুলের মুঠা ধরে টানা হেচড়া করে এবং কনুই দিয়া আমার মাজা-পিটসহ বিভিন্ন স্পষ্ট কাতর স্থানে আঘাত করলে কালশিরা ফুলা ও থেতলানো জখম হয়। এ সময় ছোট ছেলে চলে এসে তার পা ধরে বলে আমার মাকে ছেড়ে দেন। তখন সে আমার স্বামী ও দুই সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে আমি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। ওই দিন রাতে তার ছেলে ইমুল আমাদের চাপাতি দিয়ে কোপাতে আসে। আমরা পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে থানায় যাই। তারপরও তারা কোন মামলা নেয়নি। আমার স্বামী ঢাকা শহরে একটি চাইনিজ হোটেলে চাকুরীর সুবাদে ঢাকায় থাকে। আমি দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে থাকি। আর এ সুযোগে আমার ভাসুর হাফিজুর রহমান মনি আমাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় আমি ওই দিনই পরপর দুবার সোনাডাঙ্গা থানায় যাই। কিন্তু পুলিশ আমার মামলা নেয়নি। পরে আমি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-৩ একটি নালিশী পিটিশন দাখিল করি। ওই দিন মহামান্য বিচারক পিটিশনটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু অতি দু:খের ব্যাপার একমাস অতিবাহিত হওয়ার পরও তার কোন তদন্ত এখনও শুরু হয়নি। এমনকি কোন তদন্ত কর্মকর্তাও এখনও আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। আমার ভয় হচ্ছে হাফিজুর রহমান মনি তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মামলাকে প্রভাবিত করছে। আমি রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে আসামী যাতে মামলা থেকে অব্যাহতি না পেতে পারে এবং সুষ্ঠু তদন্তপুর্বক দোষী ব্যাক্তির দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি। এ সময় তার বড় ছেলে আদনান রহমান ও ছোট ছেলে গালিব রহমান উপস্থিত ছিলেন।