খুলনা ব্যুরো ও ফুলতলা সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী প্রতিশোধপরায়ন নয় বরং সহনশীল রাজনীতিতে বিশ্বাসী। ফুলতলা উপজেলায় বিগত ১৫ বছরে জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন হামলা-মামলা দিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ জুলুম ও নির্যাতনের স্টিম রুলার চালিয়েছে। ফ্যাসিস্টের বিদায় হওয়ার পর প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে তাদের মতো জুলুম, নির্যাতন, হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে কাউকে হয়রানি করা হয়নি। রোববার(১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় ফুলতলা উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসনীম জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পাপিয়া সুলতানা, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জেসমিন আরা, কৃষি অফিসার মোছা. রাজিয়া সুলতানা, প্রকৌশলী মো. ইয়াছিন আরাফাত, ফুলতলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান খান, খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন, সমাজসেবা অফিসার মো. শাহীন আলম, নির্বাচন অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খান, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ওবায়েদুল হক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. ফাতেমা বেগম, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শাহনাজ বেগম, আইসিটি অফিসার অজয় কুমার পালসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও প্রিন্সিপাল গাওসুল আযম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাস্টার সিরাজুল ইসলাম, খানজাহান আলী থানা আমীর ডা. সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটো, ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলীম মোল্যা, নায়েবে আমীর মাওলানা ওবায়দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সাইফুল হাসান খান, নজরুল ইসলাম জমাদ্দার, এইচ এম শফিউল্লাহ হাজেরী, প্রেসক্লাব ফুলতলার সভাপতি তাপস কুমার বিশ^াস, সাধারণ সম্পাদক শেখ মনিরুজ্জামান, উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি নূর মাসুম রহমান, সাংবাদিক সাইফুল্লাহ তারেক, মো. তোফাজ্জেল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি সাবেক সিবিএ নেতা ও ইউপি সদস্য মরহুম আব্দুর রশিদ শেখের বাসভবনে যান এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। এর আগে সকালে তিনি ফুলতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণমানুষের সাথে মতবিনিময় করেন।
সেক্রেটারি জেনারেল ২০০১-২০০৬ সালে এমপি থাকাকালীন সময়ে ফুলতলা-ডুমুরিয়ার বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা কোন দিনক্ষণ বেঁধে দেইনি। তবে পরিপূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত বিভাগগুলোকে পূর্ণ সংস্কার করে তার পর নির্বাচন দিতে হবে। তা না হলে অতীতের তিনটি নির্বাচনের মতো জনগণ অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারবে না। ফলে ২৪ শের ছাত্রজনতার জীবন এবং ৩০ হাজার জনগণের রক্ত ও পুঙ্গুত্ব বৃথা যাবে।
২৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির গ্রেফতার : খুলনা নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক যুবলীগ নেতা জাকির হওলাদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২ টার দিকে নগরীর মুসলমান পাড়া এলাকা থেকে খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তাকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. তৈমুর ইসলাম বলেন, তাকে গ্রেফতারের জন্য আমরা কয়েকদিন ধরে টার্গেট নিয়েছিলাম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবস্থান নিশ্চিত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত জাকিরের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে খুলনা সদরসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সেগুলো অনুসন্ধান করা হচ্ছে। সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, হাসিনা সরকারের পতনের পর জাকির গা ঢাকা দিয়েছিল। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে এলাকায় ফিরে আসেন এবং সরকার বিরোধী কর্মকান্ড সফল করার লক্ষে দলীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এলাকায় লিফলেট বিতরণও করেন।
ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত্যু: খুলনায় ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত (৫০) এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুর ১ টার দিকে জীবন বীমা অফিস ও ১০ তলা ভবনের পেছন থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে সদর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রেলস্টেশনে যাত্রী নামিয়ে রাজশাহী হতে ছেড়ে আসা সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওয়াস ফিল্ডে যাচ্ছিল। এসময়ে নিউ মার্কেট জীবন বীমা অফিস এবং নুর শপিং সেন্টার সংলগ্ন গলি দিয়ে এক ব্যক্তি দৌড় দিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেয়। স্থানীয়রা তাকে থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ট্রেনটি অজ্ঞাত ওই ব্যক্তির ওপর দিয়ে চলে গেলে মাথাটি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে কি কারণে তিনি ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিলেন তা তিনি জানাতে পারেননি। তার পরিচয় শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।