গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজের চার দিন পর পাঁচ বছর বয়সী শিশু আনাস খানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে রাজাবাড়ী ইউনিয়নের চিনাশুকানিয়া গ্রামের বাঙ্গালপাড়া বিলে কচুরিপানার নিচে স্থানীয়রা লাশ দেখতে পেয়ে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার করে। নিহত আনাস স্থানীয় চিনাশুকানিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং সৌদি প্রবাসী আল আমিনের একমাত্র পুত্র। ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মোঃ আব্দুল বারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুই আসামি নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী হাসিনা আক্তার স্বীকার করেছে যে, আনাসকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়। প্রথমে তাকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়, পরে হত্যা করে দুই দিন সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখা হয়। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় তারা লাশ বিলে কচুরিপানার নিচে ফেলে দেয়।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে প্রতিদিনের মতো খেলনা সাইকেল নিয়ে খেলতে বের হয় আনাস। এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। বহু খোঁজাখুঁজির পর তার ব্যবহৃত সাইকেলটি পাওয়া যায় প্রতিবেশী সাজুর বাড়িতে। এরপরই সন্দেহ ঘনীভূত হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে শিশুর দাদা হাছেন আলী খান শ্রীপুর থানায় জিডি করেন।

নিহতের চাচা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের আনাসকে তারা অমানবিকভাবে হত্যা করেছে। চোখ তুলে খুঁচিয়ে মারার চিহ্ন দেখেছি। এমন নৃশংসতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি, হাসমত আলী বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যেই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল। তবে এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম), সালমা খাতুন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। নিখোঁজের পর থেকেই প্রশাসন শিশুটিকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিল। এখন দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পুরো চিনাশুকানিয়া গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোক ও ক্ষোভের ছায়া। স্থানীয়রা এই নৃশংস হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।