বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ লীগ মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। আর কোনদিন তেমন নির্বাচন এদেশের মানুষ দেখতে চায় না। দেশবাসী চায় একটি পরিচ্ছন্ন, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানুষের একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে যদি সৎ লোকের নেতৃত্ব নিয়ে আসা যায়, তাহলে দেশে সৎ নেতৃেত্ব সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদকে বিদায় দিয়ে যখন একটি নতুন বাংলাদেশের যাত্রা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি তখনই নতুনরূপে আধিপত্যবাদ বিস্তারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি একটি মহল ইসলামী শক্তিকে আলাদা করার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর মানুষ অনেক সরকারের শাসন দেখেছে। এখন জামায়াতে ইসলামীর শাসন দেখতে বাকী। নতুন বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জামায়াত সহযোগিতা করে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে আছে এখনই নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতার চেয়ারে বসতে চায়। কিন্তু আমরা বলেছি, যেসব জায়গায় বিগত পনের বছরের জঞ্জাল রয়েছে সেগুলো আগে পরিষ্কার করে, সংস্কার করে তারপর নির্বাচন দিতে হবে। দেশবাসী আর ২০১৪, ২০১৮ আর ২০২৪ এর মতো কোন নির্বাচন দেখতে চায় না। খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ও রংপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে শাহপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।

রঘুনাথপুর ইউনিয়ন আমীর বেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, জেলা সহকারি সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইউসুফ ফকির, ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেন, নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, সেক্রেটারি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি মাস্টার আব্দুর রশীদ বিশ্বাস, উপজেলা যুব সভাপতি বি এম আলমগীর হোসাইন, শ্রমিক কল্যাণ উপজেলা সভাপতি মাওলানা সাইদুল্লাহ হুসাইন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাওলানা ফয়েজ উদ্দিন, আমানুল্লাহ হালদার, উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মফিজুর রহমান, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাস্টার মোস্তফা কামাল, মাষ্টার মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, মাওলানা আব্দুল মান্নান গাজী, হেলাল উদ্দিন, মাওলানা মফিজুর রহমান প্রমুখ। রমযানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য উল্লেখ করে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, কুরআন নাজিলের জন্য এই রোযার মাসের এতো গুরুত্ব। কুরআন নাজিল না হলে রোযার কোন গুরুত্ব থাকতো না। কুরআনের মধ্যে সকল বিধি বিধানের কথা উল্লেখ রয়েছে। রমযান সিয়াম সাধনা ও তাকওয়ার মাস। এ মাস মুমিনদের আত্মগঠন প্রশিক্ষণের জন্য এক অনন্য সেরা মাস। এ মাসে সংগঠিত হয়েছিল ইসলামের প্রথম যুদ্ধ বদর। বিজয় হয়েছিল পবিত্র মক্কা। রমযান মাসে ইসলামের আদর্শকে জনগণের কাছে পৌঁছানোর এক সুবর্ণ সুযোগ। দীর্ঘ ১১টি মাস অতিক্রম করে প্রতি বছর রমযান মুসলিম উম্মার কাছে ট্রেনিং এর মাস হিসেবে হাজির হয়। রোযা মানুষকে সুদ ঘুষ অন্যায় অবিচার ব্যাভিচার ও সকল পাপাচার থেকে বিরত থাকার নৈতিক শিক্ষা দেয়।

সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, সালাত হল দ্বীনের অন্যতম মূল স্তম্ভ এবং বান্দার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার। সালাত মানুষের কলবকে ¯্রষ্টামুখী করে পার্থিব লোভ লালসা ও শয়তানের চর্তুমুখী প্ররোচনা থেকে হিফাযতের কার্যকর ব্যবস্থা করে। আল্লাহ আমাদের আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা এবং গোলামী করার জন্য পাঠিয়েছেন। যে আল্লাহকে ভয় করে সে কখনও পাপ করতে পারেনা। ঘুষ দিয়ে মাস্তান বা পুলিশকে দুর্বল করা যায় কিন্তু আল্লাহকে কাবু করা যায় না। কুরআনের বিধান মেনে আমাদের চলতেই হবে তবেই এ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানুষের একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে যদি সৎ লোকের নেতৃত্ব নিয়ে আসা যায়, তাহলে দেশে সৎ নেতৃেত্ব সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে। তাহলেই কাল কিয়ামতে আমরা সফল হবো। আর যদি আমাদের চেষ্টায় ত্রুটি থাকে, তাহলে কাল কিয়ামতে আমরা ধরা খাবো।