বিরামপুর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা : দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা জোতমাধব গ্রামের প্রাকৃতিক শালবনে দুষ্প্রাপ্য গিলা লতা গাছের সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষ ,আবাল বৃদ্ধ-বনিতা গাছটি এক নজর দেখার জন্য ছুটে আসছেন।

জোতমাধব গ্রামের জালাল উদ্দিন পেশায় একজন নলকূপ মিস্ত্রি। ১১ বছর আগে রংপুর গাইবান্ধা থেকে রান্নার জন্য গিলা ফল নিয়ে এসে চারটি বীজ বপন করেন। গাছের গোড়া থেকে চারটি লতা পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে একটি আরেকটিকে জড়িয়ে ধরে লতা গুলি বনের শাল গাছের মাথায় উঠেছে। গাছটি মাটি থেকে উত্তর দিকে প্রায় ১০ হাত পশ্চিম দিকে প্রায় ১৫ হাত বিস্তৃত। এই গাছ প্রায় ১৪০ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে। গিলালতা (Entada rheedii) মজবুত কাণ্ডের লতা জাতীয় চিরসবুজ উদ্ভিদ।

গাছের কিছু লতা উপর থেকে নিচে বট গাছের মতো মাটিতে শিকড়ে পরিণত হয়েছে। গাছে ঝুলছে সিম আকৃতির বড় গিলা ফল। জালাল উদ্দিন জানান, চারটি গাছের মধ্যে একটি গাছে ফল হয়। তিনি ওই গাছ থেকে বছরে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার ফল বিক্রি করেন।

গিলা গাছ ওষুধি গুন সম্পন্ন উদ্ভিদ। এছাড়াও তরকারি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। জ্বর, বাহ্যিক ক্ষত সারাতে এবং চর্মরোগে বেশ কার্যকর একটি মহাওষুধ। এই গাছ পাহাড়ি বা শাল বনে বেশি দেখা যায়। গিলা লতার উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম Entada rheedii গোত্র ফ্যাবেসি, অর্থাৎ শিমগোত্রীয় গাছ। এর ফল শিমের মতো চ্যাপ্টা ও লম্বা। পাতা যৌগিক এবং পত্র ফলক দুই থেকে ছয়টি পত্রক যুক্ত থাকে। পুষ্প মঞ্জুরি ১২ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। গাছটির লতা কাণ্ড মোটা আঁকাবাঁকা কিছুটা বিক্ষিপ্ত এবং বেশ শক্তপোক্ত ধরনের। কিন্তু ফল যত বড়, পাতা সে রকম বড় হয় না। আমাদের দেশের দর্জিরা কাপড়ের চিহ্ন দেওয়ার কাজে ব্যবহার করে থাকেন। দেশের কোথায়ও কোথায়ও এখনো গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে গিলা বীজের ব্যবহার প্রচলিত। গিলা লতা বাংলাদেশ ছাড়া ও ভারত, ভুটান, নেপাল ও মালয়েশিয়ায় প্রাকৃতিকভাবে জন্মে।