পুরান ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলী করে হত্যার মামলায় রিমান্ডে থাকা তিন আসামী জবানবন্দী দিতে না চাইলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে এ মামলার আরেক আসামীকেও কারাগারে পাঠিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আসামীরা হলেন - মো. ফারুক হোসেন ফয়সাল, রবিন আহম্মেদ পিয়াস, মো. রুবেল ও শামীম আহম্মেদ।

পুরান ঢাকার আদালত পাড়া এলাকায় গত ১০ নভেম্বর দিনে দুপুরে গুলি করে মামুনকে হত্যার দুদিন পর ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রায়েরবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ইউসুফকে। তাদের কাছ থেকে মামুন হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের কথাও জানায় পুলিশ। তাদের মধ্যে ইউসুফকে অস্ত্র মামলায় রিমান্ড শেষে আগেই কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের আগে গত বুধবার অস্ত্র মামলায় ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলের চার দিনের রিমান্ড শেষ হয়। পরে গত রোববার হত্যায় মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রিমান্ড শেষে চার আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মধ্যে ফারুক, রবিন ও রুবেলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এজন্য তাদের পৃথক তিন আদালতে নেওয়া হয়। তবে পরে তারা জবানবন্দী দিতে অস্বীকার করেন।

অপরদিকে শামীমের জবানবন্দীর বিষয়ে আদালতে কিছু বলেননি তদন্ত কর্মকর্তা। শামীমসহ বাকি তিন আসামীকে তিনি কারাগারে পাঠানোর আবেদন করলে আদালতের তা মঞ্জুর করার তথ্য দেন প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই আবু বকর।

পুরান ঢাকার আদালত পাড়ার কাছে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ফটকে ১০ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে গুলি করে হত্যা করা হয় মামুনকে। তার স্ত্রী বিলকিস আক্তার রীপা শনিবার ঢাকার সূত্রাপুর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামী করে মামলা করেন। সেই মামলার বিবরণে বলা হয়, কতিপয় দুষ্কৃতকারী দিনে-দুপুরে জনম্মুখে মামুনকে গুলী করে হত্যা করে। এ ঘটনায় কোতয়ালী জোনাল টিমের এসআই কৃষ্ণ কুমার দাস ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ছায়া তদন্ত শুরু করেন। ছায়া তদন্তকালে এ হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার স্বপক্ষে তথ্য পেয়ে বিশেষ অভিযানে তাদের আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়।

এজাহারে বলা হয়, আসামীরা হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলির বিষয়ে তথ্য দিলে আসামী ইউসুফ মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজারের রশিদ ম্যানশনের পেছনের একটি বাড়ি থেকে দুটি পিস্তল ও গুলী বের করে দেন। জব্দ করা অস্ত্রের মধ্যে ফারুক ও রবিন হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র শনাক্ত করেন। তারা দুজন একাধিকবার গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। তারা স্বীকার করেন, দুই লাখ টাকা পেয়ে তারা হত্যাকা-ে অংশ নেন। এর মধ্যে এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা এবং হত্যাকা-ের সময় ব্যবহত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে তিনজন প্রথমে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে চাইলেও পরে দিতে অস্বীকার করেন।