গ্রাম-গঞ্জ-শহর
সিলেটে জমজমাট ইফতার বাজার
ঢাকা ও চট্রগ্রামের মত সিলেটে ইফতার বিক্রির জন্য ঐতিহ্যবাহী কোন বাজার না থাকলেও নগরীর অভিজাত এলাকায় জমজমাট ইফতার বাজার।

ঢাকা ও চট্রগ্রামের মত সিলেটে ইফতার বিক্রির জন্য ঐতিহ্যবাহী কোন বাজার না থাকলেও নগরীর অভিজাত এলাকায় জমজমাট ইফতার বাজার।
গতকাল সোমবার দ্বিতীয় রমজানে ইফতারের দোকানগুলোতে ক্রেতাসাধারণের উপচে পড়া ভিড় ছিল। বিশেষ করে জিলাপি কিনতে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও দোকানে ভিড় করেছেন ক্রেতারা। গতকাল বিকাল ৪টা থেকে সরগরম হয়ে উঠে সিলেটের ইফতার বাজার। সিলেট নগরীর হোটেল ও রেস্তোরাঁর সামনে শামিয়ানা টানিয়ে পেন্ডেল করে বিক্রি করা হয় ইফতার সামগ্রী। সিলেটের ইফতারিতে খিচুড়ি আর আখনি অপরিহার্য আইটেম। এই খাবারটি বেশিরভাগ মানুষ বাসায় তৈরি করেন। তবে ইফতারে চাহিদার শীর্ষে আরেক খাবার জিলাপি প্রায় সবাই বাইরে থেকেই কিনেন। তাই রোজার প্রথম দিনের মত দ্বিতীয় দিনেও ইফতারের আগ মুহ‚র্তে জিলাপি কিনার জন্য ভিড় করেছেন ক্রেতারা।
সরজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ পানসী, রাজবাড়ি, পালকি, উঠান রেস্টুরেন্টের সামনে আলাদা পেন্ডেল করে বিক্রি করা হচ্ছে নানা ধরেনের মুখরোচক ইফতার সামগ্রী। এছাড়া অভিজাত মিষ্টির দোকান ফুলকলি, মধুবন, স্বাদ, রাজমহলসহ প্রায় প্রতিটি রেস্টুরেন্টেই ৪০ থেকে ৬০ পদের বাহারি ইফতার সামগ্রী বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে এই রেস্টুরেন্টগুলোতে ইফতারের বিশেষ প্যাকেজ ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। ২০০ থেকে হাজার টাকা দামের প্যাকেজও আছে রেস্টুরেন্টগুলোতে। এছাড়াও নগরীর আম্বরখানা, জালালাবাদ, মদিনামার্কেট, আখালিয়া, রিকাবিবাজার, সুবিধবাজার, শিবগঞ্জ, মীরাবাজার, উপশহরসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লার রেস্টুরেন্টেগুলোতেও নানা নানা পদের ইফতারি বিক্রি হচ্ছে।
দোকানিরা জানান, ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রতি বছরের মতো এবারও ইফতারির মধ্যে চিকেন ও বিফ আখনি এবং পাতলা খিচুড়ি আছে। এর বাইরে জিলাপি, বেগুনি, আলুর চপ, ডিম চপ, পেঁয়াজি কিনছেন ক্রেতারা। তবে অনেক ক্রেতাই অন্য কোনো ইফতারি না কিনলেও জিলাপি ঠিকই কিনছেন। এর বাইরে চিকেন ফ্রাই, বাখরখানি, শাকের পাকুড়া, বিফ চাপ, ফিশ কাবাব, হালিম, চিকেন বারবিকিউ চাপও কিনছেন ক্রেতারা।
সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন চত্ত¡র এলাকায় ফুলকলি থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে জিলাপি কিনেছেন মাছুম আহমদ। তিনি বলেন, প্রথম রোজার মত আজও আখনি, বেগুনিসহ প্রয় সব ধরনের ইফতারি আইটেম বাসায় রান্না করেছেন আমার মা ও স্ত্রী। শুধু জিলাপি কিনেছি দোকান থেকে। এবার জিলাপির দাম বেড়েছে। গতবারও ২০০ টাকা কেজিতে জিলাপি কিনেছি।
বিকাল ৫ টার দিকে নগরী আম্বরখানার একটি দোকান থেকে জিলাপি কিনেন হেলাল আহমদ। তিনি বলেন, ইফতারে আমাদের বাসায় পাতলা খিচুড়ি প্রধান খাদ্য। তবে জিলাপি না হলে ইফতার সম্পন্ন হয় না। তাই আমার স্ত্রী বলে দিয়েছে অফিস শেষ করে বাসায় যাওয়ার সময় যেন জিলাপি নিয়ে যাই। এখন শেষ মুহ‚র্তে জিলাপির ক্রেতা অনেক বেশি। তাই অনেকটা ভিড় ঠেলেই জিলাপি কিনেছি।
সিলেটের সুপরিচিত রেস্তোরা পানসী রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জাহাঙ্গির আহমদ বলেন, প্রতি বছরের মত এবার আমরা ইফতারি বিক্রি করছি। আখনি, খিচুড়, জিলাপি থেকে শুরু করে ৪৩টি খাবার আমার ইফতারে রেখেছি। বিফ আখনি প্রতি কেজি ৪০০ টাকা,চিকেন আখনি প্রতি কেজি ৩২০ টাকা, ভুনা খিচুড়ি প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, পাতলা খিচুড়ি প্রতি কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি করছি। বিভিন্ন ধরনের জিলাপি আছে ৫০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও রমজানের স্পেশাল ইফতারি প্যাকেজ আছে ২২০ ও ২৪০ টাকায়। আমাদের রেস্টুরেন্ট থেকে ক্রেতারা পার্সেল নেন আবার অনেকে রেস্টুরেন্টে বসেও ইফতার করেন। #