গ্রাম-গঞ্জ-শহর
বগুড়ায় টেন্ডার বক্স দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৬
বগুড়ার সোনাতলায় টেন্ডার বক্স দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে। ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। তবে চরম উত্তেজনার এক পর্যায়ে এই টেন্ডার স্থগিত করেছে উপজেলা প্রশাসন।
Printed Edition
বগুড়ার সোনাতলায় টেন্ডার বক্স দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে। ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। তবে চরম উত্তেজনার এক পর্যায়ে এই টেন্ডার স্থগিত করেছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলায় এবার ৭টি হাটের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। হাটগুলো হলো বালুয়া, হরিখালি, কাচারি, পাকুল¬া, ভেলুরপাড়া, চরপারা, ও হাট করমজা। ৭ টি হাটে সর্বমোট ৭৬টি সিডিউল বিক্রয় হয়। সিডিউল জমা দেয়ার জন্য সকাল থেকেই উপজেলা চত্বরে আসতে থাকে দরদাতারা। তবে সকাল থেকেই থমথমে অবস্থার সৃষ্টি হয় উপজেলা চত্বর। দুপুরের আগেই ৬টি হাটের টেন্ডার ম্যানেজ হয়ে যায়, তবে বালুয়াহাট নিয়েই চলে দর কষাকষি। এই হাটের সিডিউল বিক্রয় হয়েছিল ৬,৮০০ টাকা দরে, তবে দুই দলের মধ্যে একদল প্রত্যেকটি সিডিউল ৯,০০০ টাকা দরে ক্রয় করতে চায়। অন্য এক দল ১০,০০০ টাকা দরে সিডিউল ক্রয় করে, এবং বাক্স দখল করে বসে থাকে। অন্যদিকে ৯,০০০ টাকার দল সিডিউল ফেলতে গেলে দুই দলের মধ্যে হট্রগোল শুরু হয়। এসময় বালুয়া এলাকার লোকজন সোনাতলা সদরের কিছু নেতা কর্মীকে বেধরক মারধোর করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লোকজনকে ফোনে ডেকে নিয়ে বালুয়া এলাকার লোকজনের উপর হামলা চালায় এসময় প্রায় সবাই দৌড়ে পালিয়ে গেলেও দুজন উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মডেল মসজিদের মধ্যে লুকালে সেখানে গিয়েই দুজনকে বেধরক মারপিট করে। এসময় সোনাতলা উপজেলা ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক জারিফুল ইসলাম মারপিট করতে নিষেধ করলে তার উপরেও হামলা চালানো হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে নিয়ে গেলে সেখানেও হামলা চালানো হয়। পরে বাধ্য হয়ে পালিয়ে যায় আহতরা। গন্ডগোলের সময় দুই পক্ষের হাতেই অসংখ্য লাটি, রড ও দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিলাদুন্নবীসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য, তবে এসময় তাদেরকে নীরব ভূমিকায় থাকতে দেখা গেছে, এমনকি বাশিতে ফুঁ দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়নি। এঘটনায় ওসি মিলাদুন্নবীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন ঘটনা মূলত বালুয়াহ ও সোনাতলাদের মধ্যে প্রথমে সিডিউল ফেলা নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বালুয়ার লোকজন সোনাতলার লোকজনকে কিল-ঘুষি দিতে শুরু করে, পরে আবার, সোনাতলার লোকজন বালুয়াদেরকে কিল-ঘুষি দেয়। মসজিদের মধ্যে ঢুকে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ওখানে মূলত বালুয়ার ছালামসহ দুজন লুকাইছিলো, পরে তাদেরকে উদ্ধার করে নিরাপদে পৌছে দেয়া হয়েছে। এই কর্মকর্তা আরো বলেন বিসৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য টেন্ডার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বীকৃতি প্রামানিকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মুটোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উলে¬খ্য একই দিনে বেশ কিছু গাছ বিক্রয়ের টেন্ডার হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উত্তর সুখানপুকুরে ৫টি মেহগনি গাছ ৭৮ হাজারে শ্যামপুর স. প্রা. বিদ্যালয়ের ৪টি আম গাছ ৫১ হাজারে, মোনারপোটল স. প্রা. বিদ্রালয়ের ৩টি ইউক্লিপটাস ৫৩ হাজারে টেন্ডার হয়েছে। এই কটিতে দর কষাকষিতে বাজার মূল্যের চেয়েও উচ্চ মূল্যে বিক্রয় হয়েছে, তবে মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩টি রেইন্ট্রি গাছ থাকলেও তার মধ্যে দুটির মূল্য বাজার দরে প্রায় ১ লক্ষ টাকা হলেও, কৌশল করে একটি মাত্র সিডিউল ফেলে ২ টি গাছ মাত্র ৩৮ হাজার টাকায় নিয়েছে মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স্বপন। অন্য একটি গাছ ফ্রিতেই নিয়েছেন তিনি।
রামপাল (বাগেরহাট) সংবাদদাতা : রামপালের ঝনঝনিয়া চেয়ারম্যান মোড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে এক রক্তক্ষয়ি সাংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় বিএনপি সমর্থিত দুইগ্রুপ পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নিলে এ সাংঘর্ষের ঘটনায় ১৬ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। খবর পেয়ে রামপাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ঝনঝনিয়া চেয়ারম্যান মোড়ে একটি মৎস্য আড়ৎ ও জমিজমা নিয়ে আ. রাজ্জাকের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক শেখের সাথে আরজ আলী ও তার ভাই মহিদ শেখের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকাল ১০ টায় মৎস্য আড়তের সামনে উভয়ের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় দুই পক্ষের সাথে স্থানীয় বিএনপি সমর্থিতরা জড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষ লোহার রড, হাতুড়ী, লাঠি ও দা নিয়ে হামলা, পাল্টা হামলা করে। এতে ১৬ জন গুরুতর জখম হন। আহতরা হলেন, উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের আল আমিন (৪০), আজমল শেখ (৪৩), শহিদ ব্যাপারী (৩৬), আবুল কালাম (৪০), বাবুল শেখ (৩৫), শামীম শেখ (২২), আহম্মদ আলী (৪২), ইসমাইল শেখ (৩৫), আশরাফ আলী (৫৫), তাহিদুল ইসলাম (৪০), হোসাইন শেখ (১৮), তারেক শেখ (৩৫), ফারুক হোসেন (৫৫) আবুল কালাম (৩০)। মাহিদ শেখ (৫০)। বাকীদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।এবিষয়ে রামপাল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের লোকজনের উপর হামলা হয়েছে। আমাদের ১০/১২ জনকে কুপিয়ে ও হাতুড়ী -রড দিয়ে আঘাত করে পা ভেঙ্গে দিয়েছে। আমাদের ৭ জনকে খুমেক হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আমার বাড়ীঘর ভাংচুর করার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। আকোর উপর হামলা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ হাফিজুর রহমান তুহিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করছি। ভাগার আকো ঝামেলা করছে। সে লোকজন নিয়ে রামপাল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারির পিতার দোকান ভাংচুর ও তার পিতাকে মারপিট করেছে।এ বিষয়ে রামপাল থানার ওসি মো. সেলিম রেজার কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। ঘটনাস্থলে ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঝনঝনিয়া, চেয়ারম্যান মোড়, ভাগা ও রনসেন এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান ওসি সেলিম রেজা।