জাফলং ফটোফেস্ট, পর্যটন মেলা ও স্টোন মিউজিয়াম প্রস্তুত কাজ সম্পন্ন করার প্রায় এক বছর হলেও ব্যবসায়ীদের বিল পরিশোধ করেনি প্রশাসন। পাওনা আদায়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন ও সিলেট জেলা প্রশাসনের কাছে বার বার ধর্না দিতে হচ্ছে। এ নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ ও হতাশ। পাওনাদার ব্যবসায়ীদের পক্ষে গতকাল সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এস এম ডেকোরেটার্সের পরিচালক গোলাম আহমদ চঞ্চল।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনায় জাফলং পিয়াইন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, জাফলং ফটোফেস্ট, পর্যটন মেলা আয়োজন ও স্টোন মিউজিয়াম প্রস্তুত কাজ সম্পন্ন করেন। প্রোগ্রাম চলার সময় তৎকালীন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেছিলেন, প্রোগ্রামের বরাদ্দ জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ ব্যবস্থাপনা পরিশোধ করা হবে। প্রোগ্রামের শেষে তৎকালীন জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ নিজে গিয়ে বরাদ্দের আশ্বাস দেন। সে প্রেক্ষিতে বিভিন্ন খাতে সাপোর্টিং ভাউচারসহ ১৭ লক্ষ টাকা খরচ করে আমরা বিল ভাউচার দাখিল করি। যা ইউএনও ডিসি অফিসে প্রেরণ করেন। এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুল ইসলামের বদলির আদেশ হলে এসিল্যান্ড সাইদুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে যান। ভারপ্রাপ্ত ইউএনও তাদের আশ্বাস দেন তিনি টাকার ব্যবস্থা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা আরো জানান, এরই মধ্যে নতুন ইউএনও হিসেবে রতন কুমার অধিকারী যোগদান করলে আমরা তার কাছে গিয়ে কোন সঠিক সমাধান পাইনি। বরং বিল না দিয়ে তিনি ঘুরাতে থাকেন। একপর্যায়ে গোয়াইনগাটের এসিল্যান্ড বদলি হলে ইউএনও রতন কুমার অধিকারী জানান, বিলের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এতে আমরা মর্মাহত হই। তারা বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ডিসি তৎকালীন এডিসি জেনারেল মো. আনোয়ারুজ্জামানকে দায়িত্ব দেন। এডিসি ইউএনও রতন কুমার অধিকারীর সাথে যোগাযোগ করেন। এডিসি আনোয়ারুজ্জামানের নিকট কয়েকদফা যাওয়ার তিনি জানান, বিল দেয়া হবে, তবে বিল ভাউচার নতুন করে জমা দিতে হবে। তখন তারা জানান, আগে বিল ভাউচার প্রেরণ করেছি। তিনি আমাদের বলেন, আগের বিল ভাউচার হারিয়ে গেছে। তখন আমরা ইউএনর মাধ্যমে ডিসি অফিসে আবার বিল ভাউচার জমা দেই। পরবর্তীতে এডিসি বললেন বিল ভাউচার কিছু কমিয়ে দেয়ার জন্য। যার প্রেক্ষিতে আমরা কিছু কাটছাট করে ১৪ (লক্ষ) টাকার বিল ভাউচার দাখিল করি।
এর কয়েকদিন পর জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ ও এডিসি আনোয়ারুজ্জামান বদলি হয়ে যান। খবর পেয়ে এডিসি পদ্মাসন সিংহের সাথে যোগাযোগ করলেও আমাদের বিল পরিশোধ করা হয়নি। ইউএনও, এডিসি ও জেলা প্রশাসকের পিছনে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের অবস্থা নাজেহাল। ব্যবসায়ীরা এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তাকিয়া ডেকোরেটার্সের স্বত্তাধিকারী জুয়েল আহমদ, ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম ও আল আমিন প্রমুখ।