কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের নৌকাডুবিতে তিনজন মাদরাসা শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ঘটেছে। জানা গেছে গত মঙ্গলবার সকালের দিকে উপজেলার চর আলগী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে নিহত উদ্ধারকৃত কিশোরী শাপলার ভাতিজা আবির (৭) এবং একই এলাকার মুমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের (৬)। তারাও একই মাদরাসায় পড়াশোনা করতো।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে প্রতিদিনের মতোই স্কুলগামী ৯ শিশু নৌকায় করে ব্রহ্মপুত্র নদ পার হচ্ছিল। আচমকা স্রোতে ভারসাম্য হারিয়ে শিক্ষার্থী বহনকারী নৌকাটি উল্টে যায়। এতে একের পর এক শিশুরা পানিতে পড়ে যায়। নৌকা বহনকারী নয় জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ছয় জন শিক্ষার্থী জীবিত উদ্ধার হলেও একজন কিশোরী শাপলার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং অপর দুজন শিক্ষার্থীর অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এবং স্থানীয় জেলেরা তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

ব্রহ্মপুত্র নদীতে নৌকাডুবি সময় ১৫ বছর বয়সী শাপলা প্রাণপণে সাঁতরে নিজেকে রক্ষা করছিল। হঠাৎ তার সাত বছর বয়সী ভাইপো আবির আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে— ‘ফুপু, আমাকে ধরো! আমি ডুবে যাচ্ছি!’

মুহূর্তকাল দেরি করেনি শাপলা। আত্মরক্ষার চিন্তা ভুলে ছুটে যায় আবিরের দিকে। কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের প্রবল স্রোত দুজনকেই তলিয়ে দেয়।

দীর্ঘ তল্লাশির পর স্থানীয় জেলেরাও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল শাপলার নিথর দেহ উদ্ধার করেন। কিন্তু ছোট্ট আবির ও তার সহপাঠী ছয় বছর বয়সী জুবায়েদ এখনো নিখোঁজ। তাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরিদল ও স্থানীয় জেলেরা। চর আলগী গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ আশরাফ শান্ত বলেন, ‘প্রতিবছরই কেউ না কেউ নদীর স্রোতে হারিয়ে যান। কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান পাই না। আর কত প্রাণ গেলে জাগবে প্রশাসন?’

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। নিখোঁজ দুই শিশুর সন্ধানে স্থানীয় জেলে ও ডুবুরিদলের সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুল্লাহ খালিদ বলেন, ডুবুরিদল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। যতক্ষণ না নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত অভিযান চলবে।