ধারাবাহিক সাফল্যের পথ ধরে আবারও বিশ্বমঞ্চে উজ্জ্বল উপস্থিতি নিশ্চিত করলো গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি)। যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বনামধন্য শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) প্রকাশিত ২০২৬ সালের ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং-এ গাকৃবি দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

প্রকাশিত র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়ভাবে শীর্ষে এবং গবেষণার মানদণ্ডে বৈশ্বিক পর্যায়ে ৪৬১তম অবস্থানে রয়েছে—যা বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এক যুগান্তকারী মাইলফলক। সার্বিকভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গাকৃবি ৮০১-১০০০তম গৌরবময় অবস্থানে রয়েছে।

টিএইচই-এর এ মূল্যায়নে শিক্ষাদান, গবেষণার পরিবেশ, গুণগত গবেষণা, শিল্পে সংশ্লিষ্টতা এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি—এই পাঁচটি প্রধান সূচকের অধীনে ১৩ থেকে ১৮টি উপমানদণ্ড অনুসরণ করা হয়। এবারের র‍্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ১১৫টি দেশের ২১৯১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বাংলাদেশের মোট ১৯টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় স্থান পায়, যার মধ্যে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সব সূচকে উৎকর্ষ প্রমাণ করে শীর্ষস্থান ধরে রাখে।

এর আগে ২০২৫ সালে টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি সাবজেক্ট র‍্যাঙ্কিং, ইমপ্যাক্ট র‍্যাঙ্কিং এবং এশিয়া র‍্যাঙ্কিং-এও জাতীয়ভাবে প্রথম অবস্থানে ছিল গাকৃবি। পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংস ফর ইনোভেশন (WURI) ২০২৫-এ প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে অবদানের জন্য গাকৃবি স্থান পেয়েছিল বৈশ্বিক শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭৭তম স্থানে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধারাবাহিক সাফল্যকে “বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার এক ঐতিহাসিক স্বীকৃতি” হিসেবে অভিহিত করে গাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই অর্জন শুধু গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়—এটা বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য গৌরবের প্রতীক। আমরা প্রমাণ করেছি, গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা, সঠিক পরিকল্পনা ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাংলাদেশেও বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা সম্ভব। এই র‍্যাঙ্কিং আমাদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভবিষ্যতের আরও সাফল্যের দিকনির্দেশনা দেবে।”

তিনি আরও বলেন, এই সাফল্য গাকৃবির সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মাঠকর্মীদের নিবেদিত শ্রম, নিষ্ঠা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফল। তাদের প্রতিজনকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।”

গবেষণা, উদ্ভাবন ও শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধারাবাহিক অগ্রযাত্রা দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।