চট্টগ্রামে চলতি বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে ওই ব্যক্তি মারা যান। এ নিয়ে ২০২৫ সালে চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে মোট তিনজনের মৃত্যু হলো।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মারা যাওয়া ব্যক্তি পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা নুরুল হক (৬৫)। তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন। তাদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ, ৮ জন নারী ও ৭ জন শিশু।

বর্ষা শুরু হওয়ার পর ডেঙ্গুর প্রকোপ চট্টগ্রামে বাড়ছে। এর আগেও চলতি জুলাই মাসে একদিনে ২২ জন ও ২৩ জন করে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

চলতি জুলাইয়ের প্রথম ১২ দিনে চট্টগ্রামে ১৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০৯ জনে, যার মধ্যে ৩৩৯ জন পুরুষ, ১৭৬ জন নারী ও ৯৬ জন শিশু। আক্রান্তদের মধ্যে নগর এলাকায় ২৭৭ জন এবং বিভিন্ন উপজেলায় ৩৩২ জনের বসবাস।

ডেঙ্গু আক্রান্তের মাসওয়ারি পরিসংখ্যানে দেখা যায়—জানুয়ারিতে ৭০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২৮ জন, মার্চে ২২ জন, এপ্রিল মাসে ৩৩ জন, মে মাসে ১১৬ জন এবং জুন মাসে ১৭৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়।

এর আগে ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে মোট ৪ হাজার ৩২৩ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল এবং মৃত্যুবরণ করেছিলেন ৪৫ জন। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার ঘটে—সেবছর আক্রান্ত হন ১৪ হাজার ৮২ জন এবং মৃত্যু হয় ১০৭ জনের।

২০২১ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৭১ জন, মৃত্যু হয় ৫ জনের। ২০২২ সালে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৪৪৫ জনে এবং মৃত্যু হয় ৪১ জনের।

চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বর্ষা মৌসুমে মশাবাহিত রোগ বিশেষ করে ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়ে। তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবি।