ভোগান্তির আরেক নাম খুলনার রূপসা খেয়াঘাট। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হয় হাজার হাজার যাত্রী। যাত্রীদের অভিযোগ ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী পারাপার করা হয়। বিশেষ করে রাতে অধিক পারানী নেওয়া হয়। ঘড়ির কাঁটা নয়টায় যাওয়ার আগে জনপ্রতি পারানি আদায় করা হয় পাঁচ টাকা। এমনকি প্রায়দিন রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার পর যাত্রীদের কাছ থেকে পারানী নেওয়া হয় দশ টাকা করে। আর মোটরসাইকেল প্রতি ভাড়া নেওয়া হয় বিশ থেকে ত্রিশ টাকা। ট্রলারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নেওয়া হয়। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করলে দুর্ব্যবহার করেন মাঝিরা। গ্যাংওয়ে দিয়ে জনসাধারণ চলাচলা ছিলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসনের নেই কোন নজরদারি। এমন মন্তব্য করেন রূপসা ঘাট দিয়ে নিয়মিত পারাপার হওয়া একাধিক যাত্রী। স¤প্রতি রূপসা ঘাট কর্তৃপক্ষ কাঠ বিছিয়ে দিয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুর একটায় পূর্ব রূপসা খেয়াঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সানজিদা রিকতা। এসময় মাঝি সংঘ কর্মকর্তাদের সতর্কবার্তা জানান। পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অপ্রীতিম চক্রবর্তীসহ স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা। এদিকে রূপসা ঘাটে গ্যাংওয়ে দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পন্টুনে যাতায়াত করেন যাত্রীরা। গ্যাংওয়ে ভাটার সময় মারাত্মক খাড়া হয়ে থাকে। যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে ঘাট কর্তৃপক্ষ স¤প্রতি গ্যাংওয়ের ওপর কাঠ বিছিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু পুরাতন গ্যাংওয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে অপসারণ করে নতুন গ্যাংওয়ে স্থাপনের জোর দাবি জানিয়েছেন ঘাট এলাকা দিয়ে পারাপাররত যাত্রীরা।

বটিয়াঘাটার বাইনতলা গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, রূপসা ঘাটে ট্রলার মাঝিরা অনিয়ম চালাচ্ছে। এ সব অনিয়ম দেখার কেউ নেই। যাত্রী জাহিদুল ইসলাম জানান, রূপসা ঘাটে ট্রলার মাঝিদের অনিয়মের প্রতিবাদ করলে প্রায় সময় যাত্রীদের অপমান হতে হয়। গায়ে হাতও তোলেন মাঝিরা। ট্রলারে ২০ জন যাত্রী নেওয়ার নিয়ম থাকলেও মানছেন না কেউ। ইচ্ছামত ট্রলারে উঠানো হয় অতিরিক্ত যাত্রী। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় যাত্রীদের।

যাত্রীদের অভিযোগ প্রায়ই সময় নানা ভাবে নাজেহাল হচ্ছেন তারা। হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, সরকারি-বেসরকারি, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী বিভিন্ন পেশার মানুষ নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হলেও এর নেই স্থায়ী সমাধান। মাঘি সংঘ শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশে ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী পারাপার, সন্ধ্যার পর অধিকাংশ ট্রলারে বাতির স্বল্পতা, শিশুশ্রমসহ নানা অনিয়মের পাহাড় জমা হয়েছে। বিগত দিনে ঘাটে এসব অনিয়মের কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও এখন আর পরিচালনা করা হয় না। ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাঝি-মাল্লারা। রূপসা ঘাটে খেয়া পারাপার হতে গেলে একজন যাত্রীর পারানী গুণতে হয় আট টাকা।