রাজশাহীতে পরকীয়া জেনে যাওয়ায় বন্ধুদের সহযোগিতায় স্বামীকে হত্যা করে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে স্ত্রী লাপাত্তা হয়েছেন। একই সাথে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নিহত সজিব হোসেন (২৫) এর পরিবারের সদস্যরা এসব অভিযোগ করেন।

নিহত সজিব পবা উপজেলার বেজোড়া এলাকার মো. ফিরোজ ইসলামের পুত্র। তিনি পেশায় কাঠের নকশামিস্ত্রী ছিলেন। অভিযুক্তে স্ত্রীর নাম মোছা. রিয়া খাতুন। তিনি পবার বাজিতপুর এলাকার রিয়াজ আলীর মেয়ে। ৯ বছর আগে সজিবের সাথে তার বিয়ে হয়। লিখিত বক্তব্যে সজিবের ভাই হাসিবুল ইসলাম বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রী রিয়া এলাকার শওকতের ছেলে মিনহাজের সাথে পরকীয়া করত। সেজন্য পারিবারিক জীবনে প্রায়ই তাদের কলহ লেগে থাকত। বিষয়টি আমার ভাই জেনে যাওয়ায় গত ৮ মার্চ রাতে তার স্ত্রী রিয়া, মিনহাজ, রাফিউল ইসলাম রাফু, শরিফসহ আরও ৪/৫ জন পরিকল্পনা করে আমার ভাইকে হত্যা করে লাশ আমগাছে ঝুলিয়ে রাখে। এরপর পুলিশকে ম্যানেজ করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। হাসিবুল বলেন, আমার ভাইয়ের শরীরে জখম ছিল, বাম পায়ে দুই জায়গায় ও ডান পায়ে এক জায়গায় দাগ ছিল। তার শরীরে হাতুড়ির ও ইনজেকশনের দাগ ছিল বগলে। ঘাড় মটকিয়ে ভেঙে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। কিন্তু কর্নহার থানার এসআই নিতাই ফাঁকা জায়গায় সই নিয়ে পরে আমাদের বলে, এটা আত্মহত্যা। আমার ভাই আত্মহত্যা করতে পারেন না, এটি হত্যাকাণ্ড।

থানা পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত না করে প্রভাবিত হয়ে আমাদের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। ঘটনার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলা নেয়নি, গ্রেফতারও হয়নি খুনিরা। রিয়া টাকাপয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়েছে। অন্যান্য আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। উল্টো আমাদের নামে থানায় জিডি করেছে। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে হাসিবুল বলেন, সজিব হত্যার ঘটনায় খুনিদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি, খুনিদের ফাঁসি চাই। সংবাদ সম্মেলনে তার মা মুনজুরা বেগম, ভাই হাসিবুল ইসলাম, চাচা মো. বাদশা ও প্রতিবেশী মো. মফিজ উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে ঘটনাটির তদন্ত কর্মকর্তা কর্নহার থানার এসআই নিতাই কুমার সাহা বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। তাই ইউডি মামলা হয়। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও আত্মহত্যা লেখা আছে। আমরাও তদন্ত করছি। সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

তিন ঘণ্টা পরে রেল যোগাযোগ সচল : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি (স্টপেজ) এবং স্টেশন পুনর্নির্মাণের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এত করে গতকাল বুধবার ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা চলা অবরোধে বন্ধ হয়ে যায় রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ।

বিক্ষোভকারীরা জানান, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে নন্দনগাছী রেলস্টেশনের কার্যক্রম। বর্তমানে কোনো লোকাল বা আন্তঃনগর ট্রেন সেখানে যাত্রাবিরতি করে না। প্লাটফর্মে ছাউনি থাকলেও স্টেশনটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। মাঝে মাঝে কিছু ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য থামলেও যাত্রী ওঠানামার সুযোগ থাকে না। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোর নন্দনগাছী স্টেশনে যাত্রাবিরতি নিশ্চিত করা এবং স্টেশনটির সংস্কার। অবরোধ চলাকালীন সময় রাজশাহী থেকে খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি স্টেশনের কাছে আটকে পড়ে, যার ফলে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।